ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শরতের প্রথম দিন আজ

শারমিন রহমান

 প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০২:০৩ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

ভাদ্র মাসের প্রথম দিন আজ। বাঙালির দুয়ারে আবারও কড়া নাড়ল সৌন্দর্যের ঋতু,শরৎ। খ্রিষ্টীয় পঞ্জিকা অনুযায়ী আগস্টের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই ঋতু বিরাজ করে। শুভ্রতার প্রতীক এই ঋতুতে প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সাজে। সাদা কাশফুল, শিউলির গন্ধ, স্নিগ্ধ জ্যোৎস্না আর নীল আকাশের অপার মায়া, সব মিলেই শরতের আবেদন আলাদা।

আষাঢ়-শ্রাবণের টানা বৃষ্টির অবসানে আসে শরৎ। প্রকৃতি তখন হয়ে ওঠে সতেজ, সবুজ আর উজ্জ্বল। ঘাসের বনে বাতাসে দোলে সাদা কাশফুল, যেন প্রকৃতি হাসছে। তাই তো শরৎকে বলা হয় ঋতুরানি।

বাংলা সাহিত্যে শরৎ নিয়ে অসংখ্য কবি-সাহিত্যিক লিখেছেন মুগ্ধতার সঙ্গে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ শরৎকে এঁকেছেন শুভ্রতার রঙে, শেফালি-কাশ আর নবীন ধানের মঞ্জরিতে সাজিয়ে। কবি বিনয় মজুমদার শরতের দুপুরকে দেখেছেন শুভ্র মেঘের ভেসে বেড়ানো সুধাময় মুহূর্ত হিসেবে। আর কাজী নজরুল ইসলাম আহ্বান জানিয়েছেন শারদ প্রভাতের পথিককে, শিউলিতে ভরা পথে, শিশির ধোয়া ভোরে।

শরতের অন্যতম আনন্দ শিউলি ফুল। রাতে ফোটে, ভোরে ঝরে যায়, তবে রেখে যায় ঘ্রাণের মিষ্টি আবেশ। এসময় গাছে গাছে পাকে তাল, যার স্বাদে তৈরি হয় পিঠা-পায়েস। পাশাপাশি ক্ষেতে বেড়ে ওঠে আমন ধানের চারা। শরতের জ্যোৎস্না রাতও যেন হৃদয় ভরিয়ে তোলে অদ্ভুত সৌন্দর্যে।

শরতের দ্বিতীয় মাস আশ্বিনে সন্ধ্যা নামে একটু তাড়াতাড়ি। বাতাসে আসে হালকা শীতের ইঙ্গিত, প্রকৃতি যেন ধীরে ধীরে হেমন্তের জন্য প্রস্তুত হয়। দূর থেকে শোনা যায় নীরব অথচ স্পষ্ট হেমন্তের আগমনী সুর।

এই ঋতুতেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হয়। তাই শরতের সঙ্গে মিশে থাকে আনন্দ, উৎসব আর মিলনের রঙ।

শুভ্র সৌন্দর্য আর উৎসবের আবহ মিলিয়েই শরৎ যেন প্রতিবার ফিরে আসে বাঙালির প্রাণে নতুন আবেগের বার্তা নিয়ে।

বাংলাধারা/এসআর