গাজায় দুর্ভিক্ষে ৩৫ দিনের শিশুর মৃত্যু, ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ১১৬ জনের
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১০:১৫ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধ, মানবিক সহায়তা বন্ধ এবং বিমান হামলার ফলে প্রতিদিন বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। এরই মধ্যে চরম খাদ্য সংকটে ৩৫ দিনের এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ওই দিনই আরও অন্তত ১১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের সামনে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খাদ্য ও ওষুধের অভাবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে অন্তত ১৭ হাজার শিশু।
আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, “শুধু শনিবার আমাদের হাসপাতালে অনাহারে দুজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে একটি নবজাতক।”
খান ইউনিস ও রাফাহ অঞ্চলেও ইসরায়েলি বাহিনী একাধিক হামলা চালিয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনও উদ্ধার করা হচ্ছে হতাহতদের মরদেহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, “মানুষ যখন ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়ায়, তখনই গুলিবর্ষণ শুরু হয়। খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছে।”
এদিকে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো গাজার পরিস্থিতিকে ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে’ বলে সতর্ক করেছে।আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের মহাসচিব জগন চাপাগাইন বলেন, “গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ বেঁচে থাকার লড়াই করছে।”
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের মহাসচিব ইয়ান এগেল্যান্ড জানান, “গত ১৪২ দিনে আমরা গাজায় একটি ত্রাণ ট্রাকও ঢোকাতে পারিনি। এটি মানবতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অপরাধ।”
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, মিশর সীমান্তে তাদের প্রচুর খাদ্য ও ওষুধ মজুত রয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব সহায়তা গাজায় প্রবেশ করানো সম্ভব হচ্ছে না। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, “অবরোধ তুলে দিন, সীমান্ত খুলুন এবং আমাদের মানুষ বাঁচাতে দিন।”
ইসরায়েলি অবরোধ ও দফায় দফায় হামলায় গাজা উপত্যকায় তৈরি হয়েছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সংকট আরও গভীর হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাধারা/এসআর