ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিক্ষক জান্নাতুলের মৃত্যুর জন্য প্রশাসন দায়ী: রিটার্নিং কর্মকর্তা সুলতানা আক্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ০৬:২৫ বিকাল  

ছবি: সংগৃহিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাকসু) নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সহকর্মী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফয়জুন্নেসা হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সুলতানা আক্তার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনাকে এই মৃত্যুর জন্য সরাসরি দায়ী করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে সিনেট ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,
“যদি ভোট গণনা দ্রুত সম্পন্ন করে ফলাফল ঘোষণা করা যেত, তাহলে আমাদের সহকর্মীর জীবন দিতে হতো না। আজ আমাদের কান্না করতে হতো না। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই এবং জান্নাতুল ফেরদৌসের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।”

তিনি আরও জানান, চারুকলা বিভাগের আরেক শিক্ষক কাজী মহসিনও দায়িত্ব পালনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
“এ অবস্থায় প্রশ্ন জাগে—এত বড় নির্বাচন কেন ম্যানুয়ালি গণনা করা হলো? হলে হলে ভোট গণনা শেষ করা হলে রাত ১০টার মধ্যেই ফলাফল ঘোষণা সম্ভব হতো। পরে কমিশনে পাঠালে রাত ১১টার মধ্যেই চূড়ান্ত ফল বের হয়ে যেত।”

অধ্যাপক সুলতানা আক্তার অভিযোগ করেন, নির্বাচনের আগে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছিল ভোট গণনা হবে মেশিনের মাধ্যমে, যাতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে না হয়। কিন্তু ভোট শেষে হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ম্যানুয়ালি গণনার নির্দেশ দেওয়া হয়।
“এতে আমাদের ওপর অমানুষিক চাপ সৃষ্টি হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছি,” বলেন তিনি।

জান্নাতুল ফেরদৌসকে শেষ মুহূর্তে ডেকে আনার বিষয়টি উল্লেখ করে সুলতানা আক্তার জানান,
“তিনি হয়তো প্রচণ্ড চাপ ও উদ্বেগে আগের রাতেই বিশ্রাম নিতে পারেননি। দায়িত্ব পালনের জন্য তাড়াহুড়ো করে তিনতলায় উঠতে গিয়ে তিনি পড়ে যান এবং অল্প সময়ের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন।”

তিনি বলেন, জাকসু নির্বাচনে একজন ভোটারকে তিনটি করে ভোট দিতে হয়। যদি ৮ হাজার ভোট কাস্ট হয়ে থাকে, তাহলে মোট ২৪ হাজার ভোট গণনা করতে হবে। “এত বিপুল ভোট ম্যানুয়ালি গণনা করা সম্ভব নয়। এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং আমাদের জন্য জীবনঘাতী। আমরা এই প্রক্রিয়ার পরিবর্তন চাই।”

বাংলাধারা/এসআর