পঞ্চদশ সংশোধনী মামলায় আপিলে পক্ষভুক্ত হলেন মির্জা ফখরুল
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০২, ২০২৫, ১১:১১ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে পক্ষভুক্ত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তার পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন। বিএনপির পক্ষে আবেদনটি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
গত ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ। এর আগে ৩ নভেম্বর রিটকারী সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে ড. শরীফ ভূঁইয়া লিভ টু আপিল দায়ের করেন। আপিলে পঞ্চদশ সংশোধনী পুরোপুরিই বাতিলের আবেদন জানানো হয়।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি ধারা অসংবিধানিক ঘোষণা করে গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন। রায়ে গণভোটের বিধান পুনর্বহাল করা হয় এবং বলা হয়,
দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, বরং গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যার পরিণতিই ছিল জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান।
হাইকোর্ট বলেছিল-
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ।
পঞ্চদশ সংশোধনী মাধ্যমে যুক্ত ৭ক, ৭খ এবং ৪৪(২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক; তাই এগুলো বাতিল।
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত ২০ ও ২১ অনুচ্ছেদ গণতন্ত্রবিরোধী হওয়ায় অবৈধ।
পঞ্চদশ সংশোধনী পুরো বাতিল নয়; জাতির পিতার স্বীকৃতিসহ অন্যান্য সংযোজন ভবিষ্যৎ সংসদ চাইলে আইনি প্রক্রিয়ায় সংশোধন বা পরিমার্জন করতে পারে।
গণভোটের বিধান বিলুপ্তির প্রক্রিয়া মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী হওয়ায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হয়েছে।
রায়ের সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।
রিটকারী সুজনের পক্ষে ছিলেন ড. শরীফ ভূঁইয়া।
বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নাল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও অনেকে।
জামায়াতের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী।
ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরামসহ চার আবেদনকারী ইন্টারভেনর হিসেবেও শুনানিতে অংশ নেন।
২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদ পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে। এর মাধ্যমে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়, সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে ৫০ করা হয়, এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
পরে সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুজনসহ বিভিন্ন পক্ষ রিট দায়ের করেন। হাইকোর্টে দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।
আপিলে পক্ষভুক্ত হওয়ায় এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এ মামলার পরবর্তী শুনানিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হতে পারবেন।
বাংলাধারা/এসআর
