সরকারি হুঁশিয়ারি অকার্যকর, বাড়তি দরেই এক সপ্তাহ ধরে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫, ১০:৫৩ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
বাণিজ্য উপদেষ্টার সতর্কবার্তা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি ভোজ্যতেলের বাজার। পরিশোধন ও বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে এক সপ্তাহ ধরে বাড়তি দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করে যাচ্ছে। ঘোষিত না হলেও কার্যত নতুন দরে তেল সরবরাহ করায় ক্রেতাদের লিটারে অতিরিক্ত ৯ টাকা গুনতে হচ্ছে।
গত বুধবার গণমাধ্যমে কোনো অনুমতি ছাড়াই দামে বৃদ্ধির খবর প্রকাশের পর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছিলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারকে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন, যা আইনগতভাবে অবৈধ। তিনি আশ্বাস দেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। এরপর বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে লিটারে সর্বোচ্চ ৯ টাকা পর্যন্ত দাম কমানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। আজ রোববারের বৈঠকে চূড়ান্ত দর নির্ধারণ হওয়ার কথা। কিন্তু কোম্পানিগুলো ততক্ষণ অপেক্ষা না করে আগের মতোই বাড়তি দরে তেল সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।
শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে—রূপচাঁদা, তীর, পুষ্টি, ফ্রেশসহ প্রায় সব ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল নতুন বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে। পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে ৯৬৫ টাকায়, যেখানে এক সপ্তাহ আগে একই বোতলের দাম ছিল ৯২২ টাকা। প্রতি লিটার বোতলজাত তেল এখন ১৯৮ টাকা এবং দুই লিটারের বোতল ৩৯৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল যথাক্রমে ১৮৯ ও ৩৭৮ টাকা। বাজারে স্টারশিপসহ দু-একটি ব্র্যান্ডের পুরোনো কম দামের তেল পাওয়া গেলেও তা খুবই সীমিত।
খোলা ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা এবং পাম অয়েল ১৫২ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে নির্ধারিত দাম হওয়া উচিত ছিল যথাক্রমে ১৬৯ ও ১৫০ টাকা। কারওয়ান বাজারের তুহিন জেনারেল স্টোরের মালিক মো. রায়হান বলেন, “সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। সব কোম্পানি নিয়মিত তেল দিচ্ছে। কিন্তু সবাই বাড়তি দরের তেলই দিচ্ছে।”
বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে উল্লেখ করে গত ১০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, আইন অনুযায়ী সরকারকে জানিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীদের যুক্তি ও সরকারি অবস্থান, দুটি পরস্পরবিরোধী অবস্থায় দাঁড়িয়ে গেছে।
সরকারি অনুমতি ছাড়া বাড়তি দরে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় ভোজ্যতেলের বাজারে আবারও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এর মাঝেই সাধারণ ক্রেতাদের পকেট থেকে বাড়তি অর্থ গুনে জরুরি নিত্যপণ্যের খরচ সামলাতে হচ্ছে।
বাংলাধারা/এসআর
