ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইসির সিদ্ধান্ত অবৈধ, বাগেরহাটে চার আসনই বহাল রাখার নির্দেশ আপিল বিভাগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০২:০৩ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন কমিয়ে তিনটিতে আনার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেটিকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। এর ফলে জেলায় আগের মতোই চারটি আসন পুনর্বহাল করার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ ইসির করা লিভ টু আপিল খারিজ করে এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। ইসির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী।

রায়ের পর ব্যারিস্টার জাকির হোসেন জানান, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাগেরহাটে চারটি আসন পুনর্বহালের গেজেট জারি করতে হবে। পাশাপাশি গাজীপুরেও আগের মতো পাঁচটি আসনই থাকবে।

১৯৬৯ সাল থেকেই বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)- এই চার আসনই দীর্ঘদিনের প্রচলিত বিন্যাস।

তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গত ৩০ জুলাই ইসি প্রাথমিকভাবে চার আসন কমিয়ে তিনে নামানোর প্রস্তাব দেয়। সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠনসহ হরতাল-অবরোধ থেকে শুরু করে একাধিক কর্মসূচি পালন করে স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ। শুনানিতেও আসন কমানোর বিরুদ্ধে একাধিক সংগঠন আপত্তি জানায়।

এ সব আপত্তির পরও গত ৪ সেপ্টেম্বর ইসি চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করে। এরপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বাগেরহাট প্রেস ক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন দুটি রিট দায়ের করে গেজেট বাতিলের দাবি জানায়।

রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত ১০ নভেম্বর ইসির গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করেন এবং চারটি আসন বহাল রাখার নির্দেশ দেন। ৩ ডিসেম্বর রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশিত হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন গেজেট জারির নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই ইসি আপিল করেছিল।

আজকের আপিল বিভাগের আদেশে বাগেরহাটে চার আসনই পুনর্বহালের পথ নিশ্চিত হলো।

বাংলাধারা/এসআর