হাদীর মৃত্যুতে ঢাবিতে একাধিক শোক মিছিল, কান্না আর ক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫, ১১:৫৩ রাত
ছবি: সংগৃহিত
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে নেমে আসে শোক ও ক্ষোভের ঢেউ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় একাধিক শোক মিছিল ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
হলপাড়া থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে এসে জড়ো হন। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত শোক ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মসূচিতে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নেতারাও।
মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘আমরা সবাই হাদি হব, যুগে যুগে লড়ে যাব’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাও’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’- এমন নানা স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখর করে তোলেন।
এদিকে জাতীয় ছাত্রশক্তির ব্যানারে আরেকটি শোক মিছিল টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আগে থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হন।
মিছিলে ‘লাগছে গুলি হাদির গায়, আমরা আছি লাখো ভাই’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘জান দিয়েছে আমার ভাই, খুনি তোদের রক্ষা নাই’- এমন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের, জাতীয় ছাত্রশক্তির সভাপতি জাহিদ আহসান, সাধারণ সম্পাদক আবু বাকের মজুমদার, ঢাবি শাখার সভাপতি তাহমীদ আল মুদাসসির চৌধুরীসহ বিভিন্ন ছাত্রনেতা।
রাজু ভাস্কর্যের সমাবেশে জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের বলেন,
‘আজ কথা বলার শক্তি নেই। আমাদের কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে। দুই হাজার জীবন দেওয়ার পরও কেন স্বাধীন দেশে জুলাই যোদ্ধাকে গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে?
তিনি অভিযোগ করে বলেন, হাদি মৃত্যুঝুঁকির কথা বারবার জানিয়েছিলেন, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি আগেও অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হলেও তাকে নজরদারিতে রাখা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী রিয়াদুল জুবাহ বলেন, হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যাবে না। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। যারা টকশোতে ভাইকে হত্যাযোগ্য করে তুলেছে, তাদের বয়কট করতে হবে।
হাদীর মৃত্যুতে পুরো ক্যাম্পাসে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভ, প্রশ্ন ও প্রতিবাদের সুর আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
বাংলাধারা/এসআর
