তেহরানে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা, হাজারো মানুষের শোকমিছিল
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ১২:৫৭ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ইসরায়েলের সঙ্গে টানা ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের স্মরণে তেহরানে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশাল রাষ্ট্রীয় জানাজা। রাজধানীর রাস্তাজুড়ে হাজার হাজার শোকাহত মানুষ ব্যানার, পতাকা আর শহীদদের ছবিসহ অংশ নেন এই শোকমিছিলে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আইআরআইবি সরাসরি সম্প্রচার করা ভিডিওতে দেখা যায়, লাল, সাদা ও সবুজ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনগুলোর দিকে মানুষের ছুটে যাওয়া এবং কান্নায় ভেঙে পড়ার আবেগঘন দৃশ্য। পটভূমিতে বাজানো হচ্ছিল দেশপ্রেমমূলক সঙ্গীত, যা জনতার আবেগকে আরও তীব্র করে তুলছিল।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান। তাকে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে একসঙ্গে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায়।
মঞ্চে প্রদর্শিত হয় নিহত কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার ছবি। তাদের মধ্যে ছিলেন ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি।
তেহরানভিত্তিক তাসনিম নিউজ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, জানাজায় অংশ নেওয়া বহু মানুষ দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি বহন করছিলেন এবং আমেরিকা ও ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল একাধিক বিমান হামলা চালায় ইরানের পারমাণবিক, সামরিক এবং আবাসিক স্থাপনাগুলোতে। এই হামলায় ৬০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে ছিলেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক।
ইরানও পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলায় পিছিয়ে থাকেনি। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর মহাকাশ শাখা ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’-এর অংশ হিসেবে ইসরায়েলে ২২ দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে ইসরায়েলে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়। অবশেষে, দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কমাতে ২৪ জুন যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীলতার দিকে যায়।
দীর্ঘদিনের বৈরিতা আর সাম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পটভূমিতে এই জানাজা ইরানিদের কাছে নতুন করে শোক আর প্রতিরোধের বার্তা বহন করছে।
বাংলাধারা/এসআর