পরিবেশ রক্ষা করে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রকাশিত: নভেম্বর ০২, ২০২৫, ০৩:৫৮ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
প্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিক, কার্যকর ও সমন্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ‘সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অব বাংলাদেশ’, এর প্রান্তিক মূল্যায়ন ও কৌশলগত পরিকল্পনা বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠকের বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে নিশ্চিত করা হয়।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন হযবরল অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত শৃঙ্খলার মধ্যে না আনতে পারলে এটি অর্থনীতির জন্য একসময় গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়াবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের উন্নয়ন করতে হবে পরিবেশকে প্রভাবমুক্ত রেখে। নদীর ওপর কোনো আঘাত করা যাবে না, পানির শান্তি নষ্ট করা যাবে না, কারণ পানি আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।”
সভায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ দেশের সড়ক, রেল, নৌ ও বিমানপথের সমন্বিত পরিকল্পনার একটি প্রাথমিক খসড়া উপস্থাপন করে। এতে বিদ্যমান অবকাঠামোর যথাযথ ব্যবহার ও স্বল্প পরিসরে সংস্কার বা সম্প্রসারণের মাধ্যমে একটি শৃঙ্খলিত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরির দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টা এই সমন্বিত পরিকল্পনাকে ‘দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার জন্য প্রাথমিকভাবে শক্তিশালী ভিত্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এখন আমাদের দায়িত্ব এটিকে বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন শুধু অভ্যন্তরীণ সংযোগে সীমাবদ্ধ থাকবে না, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। বিশেষ করে নদীগুলোকে জীবন্ত রেখে এগোতে হবে, কারণ নদীই আমাদের প্রাণ।”
বৈঠকে বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, “আমরা এমন একটি সমন্বিত যোগাযোগ মডেল তৈরি করতে চাই যা দেশের অর্থনৈতিক লাইফলাইন হিসেবে কাজ করবে।”
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “যেসব অঞ্চলে ছোট পরিসরে সড়ক নির্মাণ করলেই জাতীয় যোগাযোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সম্ভব, সেখানে দ্রুত পরিকল্পনা নিতে হবে।”
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান, স্থানীয় উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরও সংগঠিত করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি ‘প্ল্যানার্স উইং’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে আরও তিনটি নতুন বন্দর চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তাই এখন থেকেই এসব বন্দরকে কেন্দ্র করে সহজ, দ্রুত ও কার্যকর সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিতে হবে।”
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা একমত হন, দেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকল্প নেই।
বাংলাধারা/এসআর
