মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি-জামায়াত নেতাদের টানছে এনসিপি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন না পাওয়া হেভিওয়েট ও তরুণ নেতাদের নিজেদের দলে টানার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম ধাপে ১০০ থেকে ১৫০ আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সূত্র জানায়, এনসিপির শীর্ষ নেতাদের আসন প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন চলছে বাকি আসনগুলোর প্রার্থী বাছাই ও আলোচনার চূড়ান্ত ধাপ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেনী-১, দিনাজপুর-৩ ও বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। তবে বাকি ২৯৭ আসনে স্থানীয় প্রভাবশালী, তরুণ রাজনীতিক ও বিভিন্ন দলের মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের প্রার্থী করার পরিকল্পনা করছে এনসিপি।

দলের শীর্ষপর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আপাতত এককভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে, তবে শেষ মুহূর্তে জোট বা আসন সমঝোতার সম্ভাবনাও খোলা রাখা হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গেও যোগাযোগ ও আলোচনা চলছে। এর মধ্যে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা “উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি” পেয়েছে বলেও সূত্রের দাবি।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে এনসিপির একাধিক বৈঠক হয়েছে। এনসিপির পক্ষ থেকে যুগ্ম আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেনসহ কয়েকজন নেতা এসব বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও আলোচনা চলছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে চূড়ান্ত দরকষাকষির মাধ্যমে সমঝোতার সিদ্ধান্ত হবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “জোট বা আসন সমঝোতা নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা দেশের প্রতিটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সক্ষমতা তৈরি করছি। আগামী সপ্তাহেই প্রথম দফায় প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করব। এরপর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সমঝোতা বা জোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এর আগে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করেছি। এই মাসের মধ্যেই এনসিপির পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। কোনো জোটে গেলে তা নীতিগত অবস্থান থেকেই হবে। আমাদের কাছে জুলাই সনদ একটি মৌলিক রাজনৈতিক অঙ্গীকার।”

প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ইতোমধ্যে ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে, আর জামায়াতে ইসলামী ঘোষণা করেছে ২৯৬ আসনে প্রার্থী। তাদের পরই প্রার্থী তালিকা প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

দলটির নেতাদের আশা, মনোনয়নবঞ্চিত হেভিওয়েট ও তরুণ নেতাদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এনসিপি এবারের নির্বাচনে একটি “নতুন বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি” হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।

বাংলাধারা/এসআর