নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা দিয়ে যাবে অন্তর্বর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৫, ০৩:৪৭ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা চূড়ান্ত করে রেখে যাবে অন্তর্বর্তী সরকার। পরবর্তী সরকারই বিষয়টি বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “পে কমিশনের কাজ অত্যন্ত জটিল ও স্বাধীন। তারা তিনটি আলাদা রিপোর্ট দেবে, একটি সিভিল সার্ভিসের জন্য, একটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এবং আরেকটি অন্যান্য প্রশাসনিক খাতের জন্য। এই তিনটি রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর সমন্বয় ও পুনর্মিলন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগবে। সে কারণে আমাদের সময়ের মধ্যে পুরো কাঠামো ঘোষণা করা অনিশ্চিত। তবে আমরা একটি সুস্পষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে রেখে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো অর্থের সংস্থান। বেতন কাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন খাতেও ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজন আছে। তাই ব্যালেন্স বজায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নে বিলম্বে সরকারি কর্মচারীদের অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, এমন মন্তব্যের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “৮ বছর ধরে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন আমরা দায়িত্ব নিয়েই উদ্যোগ নিয়েছি। তাই ক্ষোভ নয়, ধৈর্য ধরাই উচিত। আমরা এমন একটি কাঠামো রেখে যাব, যা পরবর্তী সরকার গুরুত্বসহকারে বাস্তবায়ন করবে।”
তিনি বলেন, “বর্তমানে তিনটি আলাদা পে-স্কেল প্রস্তাবনাকে সমন্বয় করার কাজ চলছে। এজন্য কিছুটা সময় লাগবে। অর্থের সংস্থান আছে, তবে বাজেটের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদের অন্যান্য খাতও দেখতে হবে।”
এ সময় সাংবাদিকরা জাতিসংঘের তিন সংস্থার প্রতিবেদন তুলে ধরেন, যেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে এবং ১৬ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগবে।
জবাবে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “ওটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তৈরি প্রতিবেদন। তবে বাস্তবে বাংলাদেশে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি নয়। আমাদের খাদ্য মজুত এখন যথেষ্ট ভালো অবস্থায় আছে। আমরা সম্প্রতি সভা করে নিশ্চিত করেছি, যেন স্টক নিরাপদ থাকে এবং কৃষকও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ধান ও চালের ক্রয়মূল্য কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছি, যাতে কৃষক লাভবান হয় এবং একই সঙ্গে সরকারি মজুতও শক্তিশালী হয়। খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে সরকার দুই দিকেই সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
অর্থ উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা চূড়ান্ত করে রেখে যাওয়া সম্ভব হবে, যা ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে বাস্তবায়নের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করবে।
বাংলাধারা/এসআর
