সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি মডেল বাতিলে সায়েন্সল্যাবে শিক্ষার্থীদের অবরোধ

প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’, এর স্কুলিং মডেল বাতিলের দাবিতে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেন। তাদের অবরোধে নিউমার্কেট এলাকার মিরপুর সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘ ইতিহাস ও স্বকীয়তায় গড়ে ওঠা সরকারি কলেজগুলোর শতবর্ষী ঐতিহ্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোর কারণে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তারা বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি, বরং ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থী ফরহাদ রানা সজিব জানান, “নতুন কাঠামো চাপিয়ে দিলে শিক্ষক সংকট, প্রশাসনিক জটিলতা এবং অবকাঠামোগত ঘাটতি আরও বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা, কলেজগুলোর নিজস্ব ব্র্যান্ড ও ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।”

আরেক শিক্ষার্থী নাসিম হায়দার বলেন, “কোনো আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই ‘স্কুলিং মডেল’ নয়, অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক কাঠামোয় পরিবর্তন আনা হোক।”

সরকার ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামের একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১২ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ কমাতেই এই উদ্যোগ।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আসবে, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং কবি নজরুল সরকারি কলেজ।

ইতোমধ্যে ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি অংশীজনদের মতামত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রস্তাব করেছে। সংসদ না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ আকারে আইন প্রণয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একইসঙ্গে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি ২৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত খসড়ায় সাত কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ইন্টারডিসিপ্লিনারি কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব দেয়, যেখানে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর তিন স্তরের শিক্ষা একই কাঠামোর মধ্যে পরিচালিত হবে।

বাংলাধারা/এসআর