ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়াল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫, ১০:৩৭ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

ঘূর্ণিঝড়, মৌসুমি ঝড় এবং টানা ভারী বর্ষণের জেরে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধসে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯০০ ছাড়িয়েছে। 

শনিবার প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৯১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ২৭৪ জন। বন্যা ও ভূমিধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আচেহের তামিয়াং জেলা। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় অনেক গ্রাম-শহরের মানুষ খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকটে ভুগছে।

তামিয়াংয়ের একটি ইসলামি আবাসিক স্কুলের ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী দিমাস ফিরমানসিয়াহ রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তারা হোস্টেলে আটকা রয়েছেন। পানির মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে বন্যার পানি পান করছেন। জেলার অন্যান্য বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, সরকারি সহায়তা কেন্দ্র থেকে খাবার ও পানি আনতে গিয়ে তাদের ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবাও সুবিয়ান্তো কয়েক দিন আগে বলেছেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং সরকারের প্রস্তুতি সন্তোষজনক। তবে সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশের প্রশাসন প্রেসিডেন্টের এই মূল্যায়নের সঙ্গে একমত নয়। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জরুরি অবস্থা ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশবাদী সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে যে ব্যাপক বন উজাড়, অবৈধ খনি খনন এবং পরিবেশবিধ্বংসী শিল্প কার্যক্রমই এই বিপর্যয়কে বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা চীনের অর্থায়নে পরিচালিত নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি এবং স্বর্ণ উত্তোলনকারী এগিনকোর্ট রিসোর্সেসসহ কয়েকটি কোম্পানিকে দায়ী করেছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ে যোগাযোগ করলেও কোম্পানিগুলো কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ঘূর্ণিঝড় সেনিয়া এবং পরপর একাধিক মৌসুমি ঝড়ের সঙ্গে ভারী বর্ষণে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে থাকে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধসের ঘটনাও বৃদ্ধি পায়। এর জেরেই মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও অব্যাহত বর্ষণ ও ভেঙে পড়া সড়ক যোগাযোগ উদ্ধার কাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাধারা/এসআর