জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, শ্রদ্ধা ও আনন্দে মুখর বিজয়ের সকাল
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫, ১১:০৯ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেমেছে সর্বস্তরের মানুষের ঢল। নারী-পুরুষ, শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-সব বয়সী মানুষের পদচারণায় সকাল থেকেই মুখর হয়ে ওঠে স্মৃতিসৌধ এলাকা।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ বীর শহীদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সমবেত হন। রাষ্ট্রপতি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাধারণ মানুষের জন্য স্মৃতিসৌধ এলাকা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর ফুল হাতে উচ্ছ্বসিত মানুষ একে একে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিসৌধ এলাকায় উৎসবের আমেজ আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিশেষ করে শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক শিশুর মুখে ও হাতে আঁকা ছিল জাতীয় পতাকা, কেউ কেউ স্মৃতিসৌধের ছবি এঁকে বিজয়ের আনন্দ প্রকাশ করে।
শীত উপেক্ষা করেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারাও। তাঁদের কপালে ও পোশাকে লাল-সবুজের রঙ, হাতে উড়ছিল জাতীয় পতাকা। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘিরে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার দৃশ্য আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে।
এর আগে সকালে মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। পরে রাষ্ট্রপতি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন।
এদিকে মহান বিজয় দিবস দেশব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বরেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর পৃথক ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শন এবং বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শো অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন করবেন। দেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর উপলক্ষে আয়োজিত এই প্রদর্শনী বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাশুটিং প্রদর্শনী হিসেবে নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাধারা/এসআর
