ঢাকা, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২

রামপুরায় হত্যাযজ্ঞ

বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুলসহ চারজনের বিচার শুরুর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে রাজধানীর রামপুরায় সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠন করে এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

শুনানির শুরুতেই আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান ও শহিদুল ইসলামসহ অন্যরা।

গ্রেপ্তার দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী মো. আমির হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পলাতক দুই আসামির পক্ষে গত ২১ ডিসেম্বর শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

এই মামলায় রেদোয়ানুল ইসলাম ছাড়া গ্রেপ্তার অপর আসামি হলেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম। বুধবার সকালে ঢাকার সেনানিবাসের সাব-জেল থেকে প্রিজনভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এদিকে মামলার অপর দুই আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান।

এর আগে ৬ ডিসেম্বর ফরমাল চার্জের ওপর শুনানি শেষ করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা রেদোয়ানুল ও রাফাতকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে ব্যাপক দমন-পীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। এর মধ্যে রাজধানীর রামপুরায় প্রাণ হারান অন্তত ২৮ জন, আহত হন আরও বহু মানুষ। তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ঘটনায় বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলামকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালাতে দেখা গেছে। পাশাপাশি অপর আসামিরাও এই হত্যাযজ্ঞে নেতৃত্ব ও সহায়তা প্রদান করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে চারজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।

বাংলাধারা/এসআর