ঢাকা, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২

সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাড়ল ২৪ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৮:২০ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়েছে সরকার। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশ এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে এই সংশোধিত বাজেটের অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সংশোধিত বাজেট কার্যকর হবে।

বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

প্রেসসচিব জানান, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ২৪ দশমিক ১ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশে।

এই ইতিবাচক প্রবণতার ভিত্তিতে চলতি অর্থবছরের মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আসবে ৫ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা, কর-বহির্ভূত রাজস্ব থেকে পাওয়া যাবে ৬৫ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর-বহির্ভূত অন্যান্য উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে ২০ হাজার কোটি টাকা।

ব্রিফিংয়ে মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন শফিকুল আলম। তিনি জানান, গত বছরের শেষের দিকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৪ শতাংশে পৌঁছালেও বর্তমানে তা কমে ৭ শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছে। শীত মৌসুমে সবজির উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ায় মূল্যস্ফীতি আরও কমবে বলে সরকারের প্রত্যাশা। অর্থবছর শেষে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামবে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ অর্জিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সংশোধিত বাজেটে মোট সরকারি ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। মূল বাজেটে এই ব্যয় ধরা ছিল ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ ব্যয় কমানো হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার সংশোধিত বাজেটে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। মূল বাজেটে এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বা জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। ফলে উন্নয়ন ব্যয় কমানো হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।

সংশোধিত এডিপিতে বৈদেশিক অর্থায়ন ধরা হয়েছে ৭২ হাজার কোটি টাকা এবং দেশীয় অর্থায়ন হবে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। পরিচালনসহ বাজেটের অন্যান্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা।

সংশোধিত বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এই ঘাটতির মধ্যে বৈদেশিক উৎস থেকে নেওয়া হবে ৬৩ হাজার কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাধারা/এসআর