৫০ প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আওয়ামী লীগ : রাশেদ খান
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৩:৪৭ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে প্রায় ৫০ জন প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দলের নেতা ও বিপ্লবী যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুলি চালানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে এসব কথা বলেন রাশেদ খান। তিনি বলেন, এত গুরুতর ঘটনার পরও এখনো জড়িতদের গ্রেপ্তার না হওয়া প্রমাণ করে রাষ্ট্রযন্ত্র কার্যকরভাবে কাজ করছে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা করে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার আগে প্রশ্ন আসে, তাহলে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র্যাব ও যৌথ বাহিনী কী করছে? রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই ব্যর্থতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’
এর আগে ঘোষিত ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সরকারে ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো সক্রিয়। তাদের ধরতে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট-২’ ঘোষণা করা প্রয়োজন।
সরকারের সংস্কার কার্যক্রম নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের কথা বলে ক্ষমতায় এলেও বাস্তবে গত ১৬ মাসে কোনো দৃশ্যমান সংস্কার হয়নি। বরং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনই জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে। এর ফলেই দেশে গুপ্তহত্যা, সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা বাড়ছে।’
রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের অযোগ্যতা ও উপদেষ্টাদের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা-ইউরোপের মতো আধুনিক রাষ্ট্র গড়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই।’
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল, তাদেরই বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলেই আজ তাদের দুর্বৃত্তরা গুপ্তহত্যায় জড়াচ্ছে।’
স্বাধীনতার মূল আদর্শ প্রসঙ্গে রাশেদ খান বলেন, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার—এই লক্ষ্যগুলো আজও বাস্তবায়িত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, দীর্ঘ সময়েও তা পূরণ হয়নি।’
আওয়ামী লীগকে সরাসরি অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, ‘২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সেখানেই ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বাস্তবতাতেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। আমরা আর সেই অন্ধকার অধ্যায়ে ফিরে যেতে চাই না।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন নিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘এই নির্বাচন অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত হতে হবে। সরকার যদি জাতিকে এমন একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারে, তাহলেই নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথ খুলবে।’
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাধারা/এসআর
