ঢাকা, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২

সাবেক এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৫, ১১:৩৯ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

মুন্সীগঞ্জ-১ (সিরাজদীখান-শ্রীনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা সুকুমার রঞ্জন ঘোষ আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, দুই কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ধানমন্ডির বাসায় অবস্থানকালে পরিস্থিতি গুরুতর হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

সুকুমার রঞ্জনের স্ত্রী আভা রাণী ঘোষ জানান, সোমবার সকাল ১০টায় রাজধানীর বরদেশ্বরী কালী মন্দিরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষের মৃত্যুতে মুন্সীগঞ্জের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা সদরে তার প্রতিষ্ঠিত ঝুমুর সিনেমা হলের সামনে একটি প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই ঘটনার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যায়। এরপর ধীরে ধীরে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় পরিবার থেকেও তাকে আর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে দেওয়া হয়নি।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন ও সংগঠনের প্রতি নিবেদিত থাকার কারণে সুকুমার রঞ্জন ঘোষের একটি স্বতন্ত্র গ্রহণযোগ্যতা ছিল। মুন্সীগঞ্জের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন আলোচিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (কুল প্রতীক) এবং সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে (ধানের শীষ প্রতীক) পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, যা সে সময় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রাজনীতির পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। নিজ মালিকানায় সিনেমা হল ও ফিল্ম হাউস পরিচালনার পাশাপাশি একটি ওষুধ কোম্পানির মালিক হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাধারা/এসআর