ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ঢাবিতে রাজনীতি, উত্তাপ বাড়ছে ক্যাম্পাসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ১১:৪০ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে আবারও সরব হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি। সম্প্রতি নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক আবহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।

গত বছরের ১৫ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠেছিল। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি বদলে যায়, রাজনীতি দ্রুত ফিরে আসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। একসময় নিষ্ক্রিয় থাকা ইসলামী ছাত্রশিবিরও নতুন কমিটি ঘোষণা করে প্রকাশ্যে সক্রিয় হয়।

শুধু পুরোনো সংগঠন নয়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)’ নামে নতুন একটি ছাত্র সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। সংগঠনটিকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলেও তাদের নেতারা দাবি করছেন, তারা কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন নয়, স্বাধীনভাবে কাজ করছে।

ঢাবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী মনে করেন, আবাসিক হলে রাজনীতি করার সুযোগ না থাকলে ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণা চালানো কঠিন হবে। তার ভাষায়, “হলে সাংগঠনিক কাঠামো না থাকলে নির্বাচনে কার্যক্রম চালানো অসম্ভব।”

অন্যদিকে, ছাত্রইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু মনে করেন, হল কমিটি ছাড়া কোনো সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “হলে নানা সমস্যা দেখা দেয়, সেগুলো সমাধানে স্থানীয় নেতৃত্বই ভূমিকা রাখে। তাই হল কমিটি অপরিহার্য।”

বেশ কয়েকটি ছাত্রসংগঠনই আশঙ্কা করছে, আবাসিক হলে প্রকাশ্য রাজনীতি বন্ধ থাকলে সেখানে গোপন রাজনীতি আরও বাড়বে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা মনে করেন, প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। তার প্রশ্ন, “গোপন রাজনীতি নিয়ে প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট অবস্থান কোথায়?”

ইসলামী ছাত্রশিবিরও প্রকাশ্যে তাদের কর্মকাণ্ড স্বীকার করছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেন, “আমরা নিয়মিত প্রোগ্রাম করেছি। শিক্ষার্থীরা হল থেকেই এসব কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। আমাদের পরিচয় কারও অজানা নয়।”

সব মিলিয়ে, ডাকসু নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি ফের সরব হয়ে উঠছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, রাজনীতি হবে প্রকাশ্য ও গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে, নাকি আবাসিক হলে গোপনে চলতে থাকবে দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের রাজনীতি?

বাংলাধারা/এসআর