তত্ত্বাবধায়ক সরকারে হস্তক্ষেপ বন্ধে গণভোট চায় বিএনপি
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৫, ১০:৩৫ রাত

ছবি: সংগৃহিত
ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় কেউ যাতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, "তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সংশোধনীটা আরও শক্তিশালী করতে চাই। ভবিষ্যতে যাতে কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকারে হাত না দিতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় যদি কেউ পরিবর্তন আনতে চায়, সেটা গণভোটের মাধ্যমে করার প্রস্তাব দিয়েছি।"
আজকের বৈঠকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট নিয়েও আলোচনা হয়। সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন মতামতের কারণে ঐকমত্য হয়নি। তবে, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের বিষয়ে একমত হলেও, এর গঠনপ্রক্রিয়া এবং ক্ষমতা ও কার্যাবলী (পাওয়ার অ্যান্ড ফাংশন) নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, "বিএনপির পক্ষ থেকে ৩১ দফার ভিত্তিতে আইডিয়া নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট সৃষ্টির জন্য প্রস্তাব করেছিলাম, দেশের বিভিন্ন খাতের বিশিষ্টজন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন এবং যাদের জাতি গঠনে অবদান আছে; তাদের নিয়ে এবং যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আছে, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ; যাদের মেধা, প্রজ্ঞা এবং অভিজ্ঞতা কন্ট্রিবিউশন নেশন বিল্ডিং অ্যাক্টিভিটিসে প্রতিফলিত হয় এবং জাতি সমৃদ্ধ হয়।" এই ধারণা থেকেই ১০০ আসনের উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের প্রস্তাব করেছে বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, এই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট বিদ্যমান সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসনের মতো, আসনের অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব করবে। তবে, বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে। কেউ পিআর (প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে) পদ্ধতিতে নির্বাচন চান, আবার ক্ষমতা ও কার্যাবলী নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণ বিল কীভাবে পাস হবে, বা সংবিধান সংশোধন হলে উচ্চকক্ষে কীভাবে পাস হবে—এসব নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, অনেক দলই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে দেশের আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করে। তারা প্রশ্ন করেছে, যদি আরেকটি পার্লামেন্ট নিম্নকক্ষের প্রতিচ্ছবি হয়, তাহলে তার প্রয়োজন আছে কি না, কারণ এটি একটি ব্যয়বহুল পার্লামেন্ট হবে।
তিনি জানান, এসব বিষয়ে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন আগামী রোববার একটি সিদ্ধান্ত দেবে। সেই সিদ্ধান্ত জানার পর বিএনপি তাদের প্রতিক্রিয়া বা সম্মতি/অসম্মতি জানাতে পারবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, বৈঠকে সংবিধান সংশোধনী সংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা হয়েছে, বিশেষ করে কীভাবে সংবিধান সংশোধন করা যায় এবং বিদ্যমান সংবিধানকে কীভাবে সংশোধন করা যায়।
বাংলাধারা/এসআর