ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ইসরায়েলের হামলা, নিহত ১৮ ফিলিস্তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ১০:২৭ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবারও রক্তপাত। যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ রাফাহ ও উত্তর গাজায় একাধিক স্থানে এই হামলা চালানো হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, রাফায় পাল্টাপাল্টি গোলাগুলিতে এক ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় ‘শক্ত প্রতিক্রিয়া’ জানাতে নির্দেশ দেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, সাবরা এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৪ জন নিহত হন। খান ইউনিসে আরেক দফা হামলায় প্রাণ হারান আরও ৫ ফিলিস্তিনি। মোট হামলায় অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাজার আকাশে সারাদিন ড্রোনের উপস্থিতি ছিল। আল-শিফা হাসপাতালের কাছেও একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, যা শহরে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে। স্থানীয়রা এই হামলাকে “সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ” বলে বর্ণনা করেছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের এই হামলার পর হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে গাজায় মৃতদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। হামাস আরও জানায়, নিখোঁজ এক জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে এবং নতুন করে উস্কানি এলে বাকি ১৩ জন জিম্মির মরদেহ উদ্ধার বিলম্বিত হবে।

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও এই সহিংসতায় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে. ডি. ভ্যান্স বলেন, “যুদ্ধবিরতি এখনও কার্যকর রয়েছে, তবে এর অর্থ এই নয় যে ছিটেফোঁটা সংঘর্ষ হবে না। হামাস বা অন্য কোনো গোষ্ঠীর আক্রমণের পর ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিত ছিল, তবুও আমরা শান্তির স্থিতিশীলতা দেখতে চাই।”

অন্যদিকে, রাফাহর সংঘর্ষে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে হামাস। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলাকে যুদ্ধবিরতির “স্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করে আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। হামাস বলেছে, “আমরা যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে চলছি, কিন্তু ইসরায়েল ক্রমাগত তা ভঙ্গ করছে।”

নতুন করে এই হামলা গাজার নাজুক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। যুদ্ধবিরতি টিকবে কি না, এখন সেটিই গাজাবাসীর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

বাংলাধারা/এসআর