মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নতুন সুযোগ: রিক্রুটিং এজেন্টদের জন্য ১০ শর্ত ঘোষণা
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ১২:৫৮ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য আবারও খুলে গেল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এবার রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকেও অন্য দেশের মতো সমান সুযোগ দিচ্ছে মালয়েশিয়া সরকার। এর ফলে দীর্ঘদিন পর নতুনভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে এ সুযোগ পেতে রিক্রুটিং এজেন্টদের মানতে হবে ১০টি নির্দিষ্ট শর্ত।
আজ বুধবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ–মালয়েশিয়া যৌথ কর্ম-গোষ্ঠীর (জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ) তৃতীয় বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদল এই নতুন সিদ্ধান্ত জানায়। তারা প্রতিশ্রুতি দেয়, বাংলাদেশসহ ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের জন্য রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অভিন্ন মানদণ্ড অনুসরণ করা হবে।
এরই ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়া সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া’ পাঠিয়েছে, যা বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। এই নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, আগে যেখানে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তুলনায় অন্য দেশের এজেন্সিগুলো বেশি সুবিধা পেত, এখন সেই বৈষম্য দূর করা হবে।
সরকারি সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার শুরু থেকেই অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশের সঙ্গে সমতা রক্ষার বিষয়ে জোর দিয়ে আসছে। এর ফলে এবার বাংলাদেশি বৈধ রিক্রুটিং এজেন্টদেরও তালিকাভুক্ত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তবে এই সুযোগ পেতে রিক্রুটিং এজেন্টদের পূরণ করতে হবে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত-
১. লাইসেন্সপ্রাপ্তির পর অন্তত পাঁচ বছর সন্তোষজনকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে তিন হাজার কর্মী বিদেশে পাঠানোর প্রমাণ দিতে হবে।
৩. অন্তত তিনটি দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন ও নিয়োগ সংক্রান্ত বৈধ লাইসেন্স থাকতে হবে।
৫. সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ‘Certificate of Good Conduct’ থাকতে হবে।
৬. মানবপাচার, অর্থপাচার বা জোরপূর্বক শ্রম–সংক্রান্ত কোনো অপরাধে জড়িত থাকা যাবে না।
৭. নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র থাকতে হবে, যেখানে আবাসন ও প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকবে।
৮. অন্তত পাঁচজন আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে ইতিবাচক প্রশংসাপত্র থাকতে হবে।
৯. কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব স্থায়ী অফিস থাকতে হবে, যেখানে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।
১০. পূর্বে মালয়েশিয়া বা অন্য দেশে কর্মী পাঠানোর সময় আইনসম্মত প্রক্রিয়া অনুসরণের প্রমাণ থাকতে হবে।
এ সকল শর্ত পূরণে সক্ষম বৈধ রিক্রুটিং এজেন্টদের তালিকা মালয়েশিয়া সরকারকে সরবরাহ করবে বাংলাদেশ সরকার। সেই সঙ্গে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন দাখিলের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, “এই নতুন সুযোগ বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য বড় সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। একই সঙ্গে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি হবে।”
বাংলাধারা/এসআর
