ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্ত করল বাংলাদেশ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ০৫, ২০২৫, ০৪:২১ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার (৫ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিলুপ্ত হওয়া ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এসব ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন শরিয়াহভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এর আগে গত ৯ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সংকটে পড়া এই পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। নতুন ব্যাংকের সম্ভাব্য নাম হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ এবং ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’।

উপদেষ্টা পরিষদের সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, একীভূত প্রক্রিয়ায় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি হারানোর আশঙ্কা নেই, এবং কোনো আমানতকারীর অর্থও ঝুঁকির মুখে পড়বে না।

নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা, আর পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

পাঁচ ব্যাংকের সব সম্পদ ও দায় নতুন ব্যাংকের অধীনে আসবে। পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার প্রদান করবে, এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি নগদে এবং অন্য ১০ হাজার কোটি টাকা সুকুক বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে তোলা হবে।

সুকুক হলো শরিয়াহভিত্তিক বন্ড, যা সুদভিত্তিক বন্ডের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকার আমানত বেইল-ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেয়ারে রূপান্তর করা হবে। পরবর্তীতে রেজল্যুশন পরিকল্পনা অনুযায়ী এসব শেয়ার ফেরত দেওয়া হবে।

বেইল-ইন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানের দায় বা ঋণের একটি অংশ বাতিল করে তা শেয়ারে রূপান্তর করা হয়, যাতে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে টিকে থাকতে পারে।

প্রাথমিকভাবে নতুন ব্যাংকটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন থাকবে। তবে পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে এর মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোর আর্থিক দুরবস্থা, অনিয়ম ও প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করতেই এই একীভূতকরণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতা ফেরানোর আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাধারা/এসআর