গাজায় প্রলয়ংকরী ঝড়ের আভাস, লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুতের আশঙ্কা
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৩:০৩ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
গাজা উপত্যকার দিকে ধেয়ে আসছে প্রলয়ংকরী ঝড়, যা লাখ লাখ মানুষের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজায় আগামী দু’দিনে প্রবল ঝড় ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ৯ লাখ ফিলিস্তিনি সম্ভাব্য বন্যার শিকার হতে পারেন। দুই বছরের ইসরায়েলি হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের পর মানবিক পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়েছে, যা এই নতুন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আরও বিপর্যস্ত হতে পারে।
খান ইউনিস পৌরসভার মুখপাত্র সায়েব লাক্কান জানিয়েছেন, উপকূলজুড়ে হাজারো তাঁবু বন্যার আঘাতে প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ধসে পড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও উপচে পড়া বৃষ্টির পানি শহরবাসীর জন্য অতিরিক্ত হুমকি তৈরি করছে। ফিলিস্তিনি আবহাওয়া দপ্তরও সতর্ক করেছে, শুক্রবার ও শনিবার উপত্যকা ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।
লাক্কান বলেন, “পরিস্থিতি অভূতপূর্ব ও বিপর্যয়কর। ধ্বংসস্তূপ ও ভেঙে পড়া অবকাঠামোর মধ্যে ৯ লাখের বেশি মানুষ অনিশ্চিত অবস্থায় জীবনযাপন করছে। ইসরায়েলি হামলায় ৮৫ শতাংশ সড়ক, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন নেটওয়ার্ক ধ্বংস হয়েছে, শহরজুড়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টন ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে, যা পরিষ্কার করার সক্ষমতা নেই।”
জ্বালানি সংকটের কারণে পয়ঃনিষ্কাশন স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে, ফলে শহরের অনেক অংশে নোংরা পানি উপচে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যুদ্ধবিরতির পর অক্টোবরের ১০ তারিখ পর্যন্ত পৌরসভা মাত্র ১৬ হাজার লিটার ডিজেল পেয়ে তিন দিনের কার্যক্রম চালাতে সক্ষম হয়েছে। জরুরি টিম সীমিত সরঞ্জাম নিয়ে বাঁধ তৈরি ও পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
লাক্কান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, “খান ইউনিসের পরিস্থিতি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়া ধ্বংসস্তূপ সরানো বা সেবা পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। উপকূলে বন্যা ও মৃত্যুঝুঁকিতে থাকা দুই মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত মানুষকে বাঁচাতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
ইউএনডব্লিউএর তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ২ লাখ ৮২ হাজার বাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শীতের আগমনের আগে হাজারো পরিবার তাঁবুতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে গাজার সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে, উপত্যকার ৯৩ শতাংশ তাঁবু বসবাসযোগ্য নয়।
এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ ছাড়া মানবিক বিপর্যয় এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়।
বাংলাধারা/এসআর
