ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

জুলাই গণ-অভ্যুত্থয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৩:১৬ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা শুরু করে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য-বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায় পড়ার সময় বেলা সোয়া ১টার দিকে আদালত গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে শেখ হাসিনার বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনের অংশ পড়ে শোনান। পাশাপাশি মামলার সাক্ষীদের জবানবন্দি, গণহত্যার সংজ্ঞা এবং ঘটনার বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়।

ট্রাইব্যুনাল প্রথম অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং দ্বিতীয় অভিযোগেও মৃত্যুদণ্ড দেয়। রায়ে বলা হয়, অভিযুক্ত শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের নির্দেশদাতা হিসেবে দায়ী। একইসঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনও মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হন।

গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ের হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতার ঘটনায় করা প্রথম মামলার রায় এটি, যা ২০২৪ সালের জুলাই–অগাস্ট আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে ভারতে পলাতক অবস্থায় আছেন। আদালতে উপস্থিত ছিলেন কেবল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। রায় ঘোষণার সময় তাকে আদালত কক্ষে বিমর্ষ মুখে নীরবে বসে থাকতে দেখা যায়।

সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যানে করে তাকে আদালতে আনা হয়। প্রিজন ভ্যান থেকে আদালত কক্ষে ঢোকার সময় মাথা নিচু করে দ্রুত ভেতরে প্রবেশ করেন তিনি।

রায়কে ঘিরে ট্রাইব্যুনাল চত্বরে সকাল থেকেই ছিল কঠোর নিরাপত্তা, অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও সেনা সদস্যদের টহল এবং এলাকাজুড়ে ব্যারিকেড ও তল্লাশি।

বাংলাধারা/এসআর