ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

লন্ডন যাত্রা নির্ভর করবে মেডিকেল বোর্ডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে

খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছাতে পারে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৬, ২০২৫, ১২:১৪ দুপুর  

ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা অনিশ্চয়তায় পড়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিলম্ব এবং শারীরিক পরিস্থিতির কারণে। কাতারের আমিরের নির্দেশে পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি কারিগরি ত্রুটিতে ঢাকায় আসতে না পারায় সময়সূচি পিছিয়ে গেছে। নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শনিবার দিনের যে কোনো সময় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এদিকে ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা একই রকম সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন খালেদা জিয়া। মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. জিয়াউল হক শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, তাঁর অবস্থা এখনও ক্রিটিক্যাল। ঝুঁকিমুক্ত বলা যাচ্ছে না। সিসিইউতেই চিকিৎসা চলছে।

তিনি জানান, উন্নতির জায়গায় একধরনের অস্থিরতা আছে- হৃদযন্ত্র, লিভার ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর জটিলতা কখনো কমছে, আবার কখনো বাড়ছে। তবে ইতিবাচক দিক হলো- নিউমোনিয়ার কারণে জমে থাকা কফ ধীরে ধীরে পরিষ্কার হচ্ছে এবং তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর এন্ডোস্কোপি ও একটি মাইনর অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। রাতে মেডিকেল বোর্ডের পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

শুক্রবার সকালে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু কারিগরি সমস্যার কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি।

কাতার সরকার দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নেয় এবং নতুন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানায়। এটি আজ শনিবার বিকেলে ঢাকায় পৌঁছাতে পারে বলে বিএনপি সূত্র জানিয়েছে।

বিএনপি নেতা শায়রুল কবির খান বলেন, কাতার রাজপরিবারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সই আজ ঢাকায় আসছে। সেটি জার্মান কোম্পানির তৈরি, তবে কাতারের মালিকানাধীন।

লন্ডনের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করার প্রস্তুতি থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড। কারণ ১৩ ঘণ্টার আকাশযাত্রা তাঁর বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতির জন্য বড় ঝুঁকি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “চিকিৎসকেরা সবুজ সংকেত দিলেই তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে। আশা করছি শনিবার অ্যাম্বুলেন্স এলে, রোববার লন্ডনে নেওয়া সম্ভব হতে পারে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশের প্রতিটি মসজিদে, এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সংলগ্ন মসজিদের দোয়ায় উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুলসহ বহু নেতা-কর্মী।

শুক্রবার সকালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেই এভারকেয়ার হাসপাতালে শাশুড়ির শয্যাপাশে ছুটে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান।

তিনি প্রায় আড়াই ঘণ্টা হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করেন। মেডিকেল বোর্ডের বিভিন্ন সদস্য ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেন এবং খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান।

তার আগমনে হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল থেকেই সেখানে দলীয় নেতা–কর্মীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

২৭ নভেম্বর থেকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় সিসিইউতে রয়েছেন খালেদা জিয়া। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা অত্যন্ত সতর্কতা ও নিখুঁতভাবে চললেও শারীরিক অবস্থার অস্থিরতা বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করছে।

প্রতিদিনই হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে সময় কাটাচ্ছেন দোয়া পড়ে, আবার কেউ দাঁড়িয়ে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপডেট জানার আশায়।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস এবং কিডনি জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে ১৭ দিনের চিকিৎসা শেষে মে মাসে দেশে ফেরেন তিনি।

২৩ নভেম্বর নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, এবং ২৭ নভেম্বর থেকে ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রাখা হয়েছে সিসিইউতে।

 

খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছাতে পারে আজ
#লন্ডন যাত্রা নির্ভর করবে মেডিকেল বোর্ডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা অনিশ্চয়তায় পড়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিলম্ব এবং শারীরিক পরিস্থিতির কারণে। কাতারের আমিরের নির্দেশে পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি কারিগরি ত্রুটিতে ঢাকায় আসতে না পারায় সময়সূচি পিছিয়ে গেছে। নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শনিবার দিনের যে কোনো সময় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এদিকে ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা একই রকম সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন খালেদা জিয়া। মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. জিয়াউল হক শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, তাঁর অবস্থা এখনও ক্রিটিক্যাল। ঝুঁকিমুক্ত বলা যাচ্ছে না। সিসিইউতেই চিকিৎসা চলছে।

তিনি জানান, উন্নতির জায়গায় একধরনের অস্থিরতা আছে- হৃদযন্ত্র, লিভার ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর জটিলতা কখনো কমছে, আবার কখনো বাড়ছে। তবে ইতিবাচক দিক হলো- নিউমোনিয়ার কারণে জমে থাকা কফ ধীরে ধীরে পরিষ্কার হচ্ছে এবং তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর এন্ডোস্কোপি ও একটি মাইনর অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। রাতে মেডিকেল বোর্ডের পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

শুক্রবার সকালে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু কারিগরি সমস্যার কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি।

কাতার সরকার দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নেয় এবং নতুন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানায়। এটি আজ শনিবার বিকেলে ঢাকায় পৌঁছাতে পারে বলে বিএনপি সূত্র জানিয়েছে।

বিএনপি নেতা শায়রুল কবির খান বলেন, কাতার রাজপরিবারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সই আজ ঢাকায় আসছে। সেটি জার্মান কোম্পানির তৈরি, তবে কাতারের মালিকানাধীন।

লন্ডনের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করার প্রস্তুতি থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড। কারণ ১৩ ঘণ্টার আকাশযাত্রা তাঁর বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতির জন্য বড় ঝুঁকি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “চিকিৎসকেরা সবুজ সংকেত দিলেই তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে। আশা করছি শনিবার অ্যাম্বুলেন্স এলে, রোববার লন্ডনে নেওয়া সম্ভব হতে পারে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশের প্রতিটি মসজিদে, এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সংলগ্ন মসজিদের দোয়ায় উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুলসহ বহু নেতা-কর্মী।

শুক্রবার সকালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেই এভারকেয়ার হাসপাতালে শাশুড়ির শয্যাপাশে ছুটে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান।

তিনি প্রায় আড়াই ঘণ্টা হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করেন। মেডিকেল বোর্ডের বিভিন্ন সদস্য ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেন এবং খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান।

তার আগমনে হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল থেকেই সেখানে দলীয় নেতা–কর্মীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

২৭ নভেম্বর থেকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় সিসিইউতে রয়েছেন খালেদা জিয়া। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা অত্যন্ত সতর্কতা ও নিখুঁতভাবে চললেও শারীরিক অবস্থার অস্থিরতা বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করছে।

প্রতিদিনই হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে সময় কাটাচ্ছেন দোয়া পড়ে, আবার কেউ দাঁড়িয়ে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপডেট জানার আশায়।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস এবং কিডনি জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে ১৭ দিনের চিকিৎসা শেষে মে মাসে দেশে ফেরেন তিনি।

২৩ নভেম্বর নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, এবং ২৭ নভেম্বর থেকে ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রাখা হয়েছে সিসিইউতে।

 

বাংলাধারা/এসআর