তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বিএনপিতে উৎসবের প্রস্তুতি, অভ্যর্থনায় ব্যাপক আয়োজন
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫, ১১:৫০ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
প্রায় দেড় যুগ পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তাঁর প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দলজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ও উৎসবের আমেজ। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল, সব স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা গেছে নতুন উদ্দীপনা ও কর্মচাঞ্চল্য।
দলীয় সূত্র জানায়, তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে স্মরণকালের সেরা অভ্যর্থনায় রূপ দিতে প্রস্তুতি সভা, উঠান বৈঠক ও বিভিন্ন পর্যায়ের সাংগঠনিক বৈঠক ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভা থেকে নেতাকর্মীদের জন্য দেওয়া হচ্ছে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা। একই সঙ্গে গঠন করা হয়েছে অভ্যর্থনা কমিটি এবং নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণা আসার পর থেকেই বিএনপির প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটকে বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীরা জানান, এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দলের ভেতরে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
গত সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভায় তারেক রহমানকে কীভাবে অভ্যর্থনা জানানো হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকের পর ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি জোরদার করেছে।
দলীয় দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে অভ্যর্থনা ও সার্বিক প্রস্তুতি সমন্বয়ের জন্য একাধিক বিশেষ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে অভ্যর্থনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে। কমিটিতে ১০ জন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির শীর্ষ নেতারা সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
এদিকে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে।
দলীয় সূত্র জানায়, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিপুল জনসমাগমের মাধ্যমে তাঁকে বরণ করে নেওয়া হবে। বিমানবন্দর থেকে গুলশানের এভারকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীরা অভ্যর্থনা জানাবেন। দেশে ফিরেই তিনি তাঁর মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন।
পরে তারেক রহমান গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসায় উঠবেন, যা চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’র পাশেই অবস্থিত। পাশাপাশি গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় এবং নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাঁর জন্য আলাদা কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,
‘দেশবাসী আমাদের নেতার অপেক্ষায় রয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী সুশৃঙ্খলভাবে সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আমরা সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছি।’
দলীয় সূত্র জানায়, দেশে ফিরে তারেক রহমান সরাসরি নির্বাচনী মাঠে নামবেন। সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনায় বিভাগীয় পর্যায়ে বড় সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে। এসব জনসভায় তিনি সশরীরে অংশ নেবেন।
এর আগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান নিজেই নির্বাচনী প্রচারে মাঠে থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন,
‘আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে, ওয়ার্ডে-মহল্লায়, রাজপথে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকব।’
বাংলাধারা/এসআর
