ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শতবর্ষ উদযাপনের চার মাস পর পর্দার আলো নিভল জুন লকহার্টের

বিনোদন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০৩:১৭ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

হলিউডের সোনালি সময়ের অন্যতম স্নেহময় মুখ, অভিনেত্রী জুন লকহার্ট আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকায় স্থানীয় সময় ২৩ অক্টোবর রাত ৯টা ২০ মিনিটে বার্ধক্যজনিত কারণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। মাত্র চার মাস আগেই, গত ২৫ জুন নিজের শততম জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন প্রিয়জনদের সঙ্গে।

লকহার্টের পরিবার সূত্রে পিপল ম্যাগাজিন জানিয়েছে, মৃত্যুর সময় তাঁর পাশে ছিলেন মেয়ে জুন এলিজাবেথ এবং নাতনি ক্রিশ্চিয়ানা। পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, অভিনেত্রীর মৃত্যু ছিল “শান্ত ও স্বাভাবিক”।

১৯২৫ সালের ২৫ জুন নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন জুন লকহার্ট। তাঁর অভিনয় রক্তে প্রবাহিত, পিতা-মাতা দুজনেই ছিলেন মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেতা। মাত্র ৮ বছর বয়সে থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে মঞ্চে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ১৯৩৮ সালে মুক্তি পাওয়া ক্লাসিক চলচ্চিত্র ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’-এ ছোট্ট একটি চরিত্রে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর।

১৯৫৮ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সিবিএস-এর জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ ‘ল্যাসি’-তে ‘রুথ মার্টিন’ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন তিনি। এরপর ‘লস্ট ইন স্পেস’ (১৯৬৫-১৯৬৮) সিরিজে মহাকাশযাত্রী এক মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে হন বিশ্বজোড়া খ্যাতির অধিকারী। রবিনসন পরিবারের সেই মমতাময়ী মা চরিত্রই তাঁকে অমর করে দিয়েছে।

জুন লকহার্ট ছিলেন এমন এক অভিনেত্রী, যিনি প্রতিটি চরিত্রে মমতা, দৃঢ়তা আর কোমলতার এক অনন্য মিশ্রণ উপহার দিয়েছেন। ‘ল্যাসি’-র পর তাঁকে দেখা গেছে আরও অনেক জনপ্রিয় সিরিজে—যেমন ‘জেনারেল হসপিটাল’, ‘নটস ল্যান্ডিং’, ‘দ্য কলবিস’ প্রভৃতি। পাশাপাশি কাজ করেছেন বিভিন্ন গেম শো ও টক শোতেও।

তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে,‘লক দিস অ্যান্ড হেভেন টু’, ‘অ্যাডাম হ্যাড ফোর সন্স’, ‘সার্জেন্ট ইয়র্ক’, ‘মিস অ্যানি রুনি’, ‘ফরএভার অ্যান্ড আ ডে’ এবং ‘মিট মি ইন সেন্ট লুইস’।

জীবনের এক পর্যায়ে চলচ্চিত্র থেকে টেলিভিশনে স্থায়ীভাবে পা রাখেন লকহার্ট। আর সেখানেই নিজেকে গড়ে তোলেন মার্কিন টেলিভিশনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে।

ব্যক্তিজীবনে দুইবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী, তবে দু’বারই বিচ্ছেদ ঘটে। জীবনের শেষভাগে তিনি পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের মাঝেই কাটিয়েছেন সময়।

হলিউডের ইতিহাসে জুন লকহার্ট শুধু একজন অভিনেত্রী নন, ছিলেন এক প্রজন্মের মায়ের প্রতীক,যিনি পর্দায় মমতার মুখ হয়ে উঠেছিলেন। শতবর্ষ পেরিয়েও তাঁর উপস্থিতি যেন সময়ের গণ্ডি অতিক্রম করে থেকে যাবে দর্শকের হৃদয়ে।

বাংলাধারা/এসআর