ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সকালের নাশতায় কী খাবেন: পুষ্টিবিদদের সহজ কিছু পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫, ১০:৩৭ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

সকালের নাশতা শুধু দিনের প্রথম খাবার নয়, এটি সারাদিনের শক্তি, মনোযোগ, মানসিক সতর্কতা আর সামগ্রিক সুস্বাস্থ্যের ভিত্তি। তাই সকালে কী খাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে দিনের পুরো মুড, কর্মশক্তি ও শারীরিক সুস্থতা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রক্রিয়াজাত নয় বরং প্রাকৃতিক, ফাইবারসমৃদ্ধ ও পুষ্টিকর খাবার দিয়ে দিন শুরু করাই সবচেয়ে ভালো।

মেডিকেল নিউজ টুডের মতে, পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী সকালের নাশতার জন্য সবচেয়ে উপকারী কিছু খাবার নিচে তুলে ধরা হলো। চাইলে নিজের পছন্দ অনুযায়ী এগুলো মিলিয়ে ভিন্নধর্মী নাশতা তৈরি করতে পারেন।

সকালের নাশতার ১১টি সেরা পুষ্টিকর খাবার

১. ওটমিল

ওটমিলে রয়েছে বিশেষ ফাইবার ‘বেটা-গ্লুকান’, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে ও কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। এতে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকে। নিয়মিত ওটমিল খেলে অন্ত্র ভালো থাকে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ফল, দই বা বাদাম মিশিয়ে ওটমিল আরও পুষ্টিকর করা যায়।

২. ডিম

ডিম উচ্চমানের প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস। পরিমিত ডিম খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং শক্তি বাড়ানো, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ ও রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেদ্ধ, পোচ বা স্ক্র্যাম্বল- যেভাবেই খান, ডিম সব সময়ই পুষ্টিকর।

৩. বাদাম

বাদামে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিন। প্রতিদিন অল্প পরিমাণ বাদাম খেলে হৃদরোগ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমে।
টোস্টের সঙ্গে পিনাট বাটার, আমন্ড বাটার বা কাজুবাদাম বাটারও ভালো বিকল্প।

৪. কফি

কফির ক্যাফেইন মনোযোগ বাড়ায়, ক্লান্তি কমায় এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, চিনি ছাড়া কফি টাইপ-২ ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
চিনি বা ক্রিম না দিয়ে চাইলে নন-ফ্যাট বা উদ্ভিজ্জ দুধ ব্যবহার করুন।

৫. বেরি ফল

ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাসবেরি বা ব্ল্যাকবেরি, সবই কম ক্যালোরির কিন্তু ভরপুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার। এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং প্রদাহ কমায়। দই, ওটমিল বা সিরিয়ালের সঙ্গে এগুলো দারুণ মানায়।

৬. ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসি বীজ

তিসিতে রয়েছে ওমেগা-৩, ফাইবার ও প্রোটিন। এটি কোলেস্টেরল কমায়, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
গ্রাউন্ড ফ্ল্যাক্সসিড স্মুদি, দই বা ওটমিলে মিশিয়ে খাওয়াই ভালো।

৭. দই

দই প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ, পাশাপাশি প্রোবায়োটিক থাকার কারণে অন্ত্র ভালো রাখে। বেরি, কলা বা বাদামের সঙ্গে দই একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুস্বাদু নাশতা।

৮. চা

গ্রিন, ব্ল্যাক, হোয়াইট বা উলং, যে চাই হোক, এতে থাকা পলিফেনল ও অ্যামিনো অ্যাসিড মন সতর্ক রাখতে এবং হজমে সহায়তা করে। চা শরীর হাইড্রেট করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৯. কটেজ চিজ

কটেজ চিজ প্রোটিনসমৃদ্ধ, পাশাপাশি এতে থাকে ভিটামিন ও প্রোবায়োটিক। এটি একা খাওয়া যায়, কিংবা ফল ও সবজির সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যায়। লো-সোডিয়াম কটেজ চিজ বেছে নেওয়া উত্তম।

১০. কলা

কলা দ্রুত শক্তি যোগায় এবং পটাশিয়ামের ভালো উৎস, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ওটমিল বা বাদামের মাখনের সঙ্গে খেলে এর পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়।

১১. সম্পূর্ণ শস্যজাত খাবার

হোল গ্রেইন খাবারে থাকা ফাইবার হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। তাই সকালে হোল-গ্রেইন টোস্ট, ব্রাউন ব্রেড বা রোলড ওটস ভালো বিকল্প হতে পারে।

দিনের ভালো শুরু চাইলে নাশতায় রাখুন পুষ্টিকর খাবার

সকালের নাশতা এমন হওয়া উচিত যা শরীরে শক্তি জোগায়, দীর্ঘক্ষণ তৃপ্ত রাখে এবং পুষ্টিতে ভরপুর থাকে। ওটস, ডিম, ফল, দই, বাদাম এই খাবারগুলো দিয়ে তৈরি নাশতা আপনাকে রাখবে আরও সতেজ ও সক্রিয়।

নিজেকে চনমনে রাখতে চাইলে প্রতিদিন সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়ার অভ্যাস গড়ুন,দিনটাও ভালো যাবে, শরীরও ভালো থাকবে।

বাংলাধারা/এসআর