জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০১:৩৫ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত গণহত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আজ সোমবার মামলার সকল নথিপত্র ও ডিজিটাল প্রমাণাদি (সিডি) সহ প্রসিকিউশনের কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়।
প্রসিকিউশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত অপর দুইজন হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। প্রসিকিউশন বিভাগের পক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
তদন্ত সংস্থার জমা দেওয়া প্রতিবেদনটি এখন প্রসিকিউশন বিভাগ যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র (ফরমাল চার্জ) হিসেবে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবে। ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এরপর অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এটি প্রশাসন বিভাগের পক্ষ থেকে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা সংক্রান্ত দ্বিতীয় তদন্ত প্রতিবেদন। এর আগে চানখারপুলে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছিল।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেয়। শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমন করতে আওয়ামী লীগ সরকার যে দমন-পীড়নের পথ বেছে নেয়, তা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেয়। আন্দোলনের সময়কার সেনা-ম্যাজিস্ট্রেসি, নির্বিচার গুলি, গণহত্যা ও নিপীড়নের ঘটনায় প্রাণ হারান প্রায় দেড় হাজার মানুষ। এই গণহত্যার নির্দেশদাতা ও মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে চলছে বিচার কার্যক্রম।
এই আন্দোলনের মধ্যেই ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যারা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে।
বাংলাধারা/এসআর