ঢাকা, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

গোপালগঞ্জে সহিংসতা: চার দিনে চার হত্যা মামলা, আসামি ছয় হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ০৫:৪৭ বিকাল  

ছবি: সংগৃহিত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় চার জন নিহত হওয়ার পর চারটি পৃথক হত্যা মামলা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় ১,৪০০ থেকে ১,৫০০ জন করে অজ্ঞাতনামা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আসামির সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়েছে।

শনিবার(১৯ জুলাই) রাতে এসব মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।

গত বুধবার এনসিপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা শেষে গাড়িবহর মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা দিলে গোপালগঞ্জ শহরের এসকে সালেহিয়া মাদ্রাসার কাছে সংঘর্ষ শুরু হয়। এনসিপির অভিযোগ, এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১,৫০০ নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। পুলিশের বাধা পেয়ে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকেও গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন রমজান কাজী (১৭), যিনি পরে হাসপাতালে মারা যান।

রমজান কাজী হত্যায় সদর থানার এসআই আইয়ুব হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একইভাবে দীপ্ত সাহা (২৭), সোহেল রানা মোল্লা (৩০) ও ইমন তালুকদার (১৭) হত্যার ঘটনায় আরও তিনটি মামলা দায়ের করেছেন থানার অন্য তিনজন এসআই।

সব মামলার ভাষ্য প্রায় অভিন্ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সহিংসতা ও গুলি চালায়, যাতে ওই চারজন প্রাণ হারান।

ঘটনার পরদিন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিকশাচালক রমজান মুন্সী (৩২)। তার মৃত্যুর ঘটনাতেও একটি মামলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এনসিপির দাবি, নিহতদের লাশের সুরতহাল বা ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন বা দাহ করা হয়েছে। দীপ্ত সাহার দেহ ইতোমধ্যে দাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার। পুলিশ বলছে, বিলম্বে হলেও ময়নাতদন্তের চেষ্টা চলছে।

অল্প সময়ের ব্যবধানে চারটি মামলায় হাজার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তি আসামি হওয়ায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার আশঙ্কা করছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তবে পুলিশ বলছে, তদন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে চলবে।

ঘটনার জেরে গোপালগঞ্জে এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাধারা/এসআর