ঢাকা, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ঘরের মাঠে পাকিস্তান চ্যালেঞ্জ, আত্মবিশ্বাসী লিটনরা

স্পোর্টস্ ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১১:৫৯ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ আবারও এক গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কা সফরে সিরিজ জয় দিয়ে হারানো আত্মবিশ্বাস কিছুটা ফিরে পেয়েছে লিটন কুমার দাসের দল। তবে এবার প্রতিপক্ষ পাকিস্তান এক দল, যাদের বিপক্ষে প্রায় এক দশক ধরে টি-টোয়েন্টিতে জয়হীন বাংলাদেশ।

ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা বাংলাদেশের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। বলেছেন, “বাংলাদেশ যেকোনো কন্ডিশনে ভালো দল।” এটি নিছক সৌজন্য নয়, বরং প্রতিপক্ষকে সম্মান জানানোর ইঙ্গিত। এমন প্রশংসা লিটনদের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা হতে পারে। যদিও পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫ সালে মিরপুরে প্রথম ও একমাত্র টি-টোয়েন্টি জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর কেটে গেছে ৯ বছর, আর একটি জয়ও আসেনি এই সংস্করণে।

সর্বশেষ মে মাসে লাহোরে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। দেড় মাস পর মিরপুরে হলেও সেই পরাজয়ের ক্ষত এখনো স্পষ্ট। তবে শ্রীলঙ্কা সফরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে যে আত্মবিশ্বাস জন্মেছে, সেটি আজকের ম্যাচে কাজে লাগাতে পারলে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ জানানো সম্ভব।

লিটন কুমার দাস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এই ম্যাচে দুই দলের জন্যই সমান সুযোগ আছে।” পাকিস্তানের শক্তি সম্পর্কে সতর্ক লিটন আরও বলেন, “তাদের অধিকাংশ খেলোয়াড় বিপিএলে খেলে। ফলে মিরপুরের কন্ডিশন তাদের অজানা নয়।” শ্রীলঙ্কা সিরিজ জয়ের পর পাকিস্তানকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে লিটন বলেছিলেন, “তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে এবং শক্তিশালী দল। আমাদেরও ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।”

মিরপুরের উইকেট নিয়ে কিছুটা শঙ্কা থাকলেও লিটন আশা করছেন একটি স্পোর্টিং উইকেটই পাওয়া যাবে। কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা জানিয়েছেন, টানা তিন দিনের বৃষ্টির কারণে উইকেট ঠিকভাবে প্রস্তুত করা যায়নি। উইকেটের নিচে এখনো জমে থাকা পানি এবং রোল করার সময় ভেজা অবস্থায় থাকার কথা জানিয়েছেন কিউরেটর। আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

লিটন বলেন, “উইকেটের জন্য দায়ী মানুষটার হাতেও সময় ছিল না। এই অবস্থায় উইকেট নিয়ে ভাবার কিছু নেই। আমরা কেমন খেলি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।”

উইকেট যদি টিপিক্যাল মিরপুরের মতো ট্রিকি হয়, তাহলে একাদশে স্পিন ও পেসের ভারসাম্য রাখা হতে পারে। সম্ভাব্য স্পিনার হিসেবে দেখা যেতে পারে শেখ মেহেদী হাসান ও রিশাদ হোসেনকে। পেস আক্রমণে থাকবেন মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলাম—যারা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে খেলেছিলেন।

টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২২ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ৩টিতে। তবে একটি জয় এসেছিল এই মিরপুরেই, ২০১৫ সালে মুস্তাফিজের অভিষেক ম্যাচে। সেই স্মৃতি দলকে অনুপ্রাণিত করতেই পারে। যদিও ২০২৩ সালে ঝাংঝুতে যে জয়টি এসেছে, তা জাতীয় দল নয় বরং 'এ' দলের অর্জন—তবে সেটিও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হিসেবেই গণ্য।

আজ যদি বাংলাদেশ দল সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারে, তাহলে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। লিটনের কণ্ঠে তাই দৃঢ় প্রত্যয়, “যে কোনো দলকে হারানোর মতো মানসিকতা আমাদের আছে। চেষ্টা করব আমাদের দিনে ভালো ক্রিকেট খেলতে।”

ঘরের মাঠ, ঘরোয়া দর্শক, এবং সাম্প্রতিক আত্মবিশ্বাস সব কিছু মিলিয়ে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ দল চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। শুধু প্রয়োজন নির্ভার মানসিকতা ও দৃঢ় পারফরম্যান্স। তাহলে হয়তো দীর্ঘ অপেক্ষার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় ফিরতে পারে মিরপুরেই।

বাংলাধারা/এসআর