ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে ৭১’র প্রতিশোধ: শেহবাজ

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ১২:১০ দুপুর  

ফাইল ছবি

ভারতের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছে পাকিস্তান- এমনই দাবি করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। বুধবার সীমান্তবর্তী পাশরুর সেনাঘাঁটিতে এক ভাষণে তিনি বলেন, “তোমরা একাত্তরের বদলা নিয়েছো… এখন পুরো জাতি তোমাদের পাশে আছে।”

এই বক্তব্যে দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরবৈরী পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হলো।

সম্প্রতি ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ এক হামলার পর, ভারত সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান ভূখণ্ডে সামরিক অভিযান চালায়। এর পাল্টা জবাব হিসেবে পাকিস্তান শুরু করে ‘বুনিয়ান-উন-মারসুস’ নামের অপারেশন।

শেহবাজ জানান, পাকিস্তানের ওই অভিযানে ভারতের অন্তত ২৬টি সামরিক স্থাপনা, বিমানঘাঁটি ও যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। তিনি দাবি করেন, “আমরা একাধিক রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছি। আমাদের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে আর কেউ যেন ভুল না করে।”

শুধু প্রতিশোধ নয়, ভারতকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারিও দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “আবার আগ্রাসন হলে ভারত সবকিছু হারাবে। আমরা যেমন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, তেমনি আলোচনার পথও খোলা রাখতে চাই। পছন্দ ভারতের।”

তিনি আরও বলেন, পানি ইস্যু পাকিস্তানের জন্য ‘রেড লাইন’। “যদি আমাদের নীলম-ঝেলম প্রকল্প কেউ ধ্বংস করে দেয়, আমরা বাগলিহারসহ ভারতের বড় বড় বাঁধগুলো উড়িয়ে দিতে একটুও পিছপা হবো না।”

তবে যুদ্ধের হুঙ্কারের পাশাপাশি শেহবাজ দিলেন শান্তির আহ্বানও। কাশ্মীর সংকট ও পানি বিতর্কে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, “এসো, আগুন নেভাই। বসে কথা বলি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজি।”

তিনি জানান, জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলেছেন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পাল্টাপাল্টি হামলা ও কূটনৈতিক বাক্যবাণ দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সীমান্তে বাড়ছে সামরিক তৎপরতা। আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে- বিশেষ করে দুটি দেশেরই পরমাণু অস্ত্র থাকার কারণে পরিস্থিতি যে কোনও সময় বিপজ্জনক মোড় নিতে পারে।

শেহবাজের বক্তব্যে স্পষ্ট, পাকিস্তান নিজেদের ‘প্রতিরোধ শক্তি’ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। তবে একই সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রাখার বার্তাও দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, ভারত কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়- যুদ্ধের পথ, না আলোচনার টেবিল?

 

বাংলাধারা/এসআর