ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

চড়া সবজির বাজারে হাঁসফাঁস ক্রেতা, মরিচের ঝাঁজ এখনো কমেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ১২:৩৭ দুপুর  

ছবি: বাংলাধারা

রাজধানীর বাজারে সবজির দাম যেন নাগালের বাইরে। মৌসুমের শেষ ভাগ, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর সরবরাহে ঘাটতির অজুহাতে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের সবজি। বিশেষ করে কাঁচা মরিচের দাম এখনও থামার নাম নিচ্ছে না।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর রামপুরা, মহাখালী, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির পাশাপাশি কাঁচা মরিচও বিক্রি হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ মানভেদে ২৪০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও অন্যান্য সবজির মধ্যে বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ধন্দুল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, জালি ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, আলু ৩০ টাকা এবং কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাজেদুর রহমান বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সবজির দাম বাড়তি। বিশেষ করে কাঁচা মরিচের দাম তো আর সহ্যের মধ্যে নেই। আজকে এক পোয়া মরিচ কিনলাম ৮০ টাকায়! আসলে নিয়মিত বাজার তদারকি থাকলে হয়তো ব্যবসায়ীরা এমনটা করতে পারত না।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারের উচিত নিয়মিত বাজার মনিটরিং চালু করা। না হলে আমরা সাধারণ মানুষ প্রতিদিনই ঠকতে থাকব।”

সবজির দাম বাড়ার বিষয়ে মহাখালীর সবজি বিক্রেতা আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, “গেল ক’সপ্তাহ ধরেই বাজারে সবজির সরবরাহ কম। এর মূল কারণ হলো অনেক মৌসুমি সবজির উৎপাদন শেষ হয়ে এসেছে। এছাড়া কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকায় সবজি ঠিকমতো আসছে না। এই কারণেই দাম কিছুটা বাড়তি।”

কাঁচা মরিচের ঝাঁজ প্রসঙ্গে কারওয়ানবাজারের বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, “বৃষ্টি হলেই মরিচের দাম বাড়ে। গেল কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হয়েছে, ফলে সরবরাহ কম। আজকের বাজারে তাই প্রতি কেজি মরিচ ২৪০ থেকে ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।”

কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কৃষিপণ্যের মূল্য ওঠানামা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও আমাদের দেশে বাজার ব্যবস্থাপনা দুর্বল হওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব বেশি পড়ে। তারা মনে করেন, কৃষিপণ্যের সুষ্ঠু মজুদ ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বাজার নজরদারি জোরদার করা না হলে বারবারই সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, বৃষ্টি কমে গেলে এবং নতুন মৌসুমি সবজি বাজারে এলে দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে ততদিন পর্যন্ত সবজির ঝাঁজ সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়েই থাকবে।