দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন: জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পেল আপিল বিভাগে
প্রকাশিত: জুন ০১, ২০২৫, ০২:১৯ দুপুর

ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে দলটির ঐতিহাসিক প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাবে কি না- সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রোববার (১ জুন) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে প্রায় এক যুগের আইনি লড়াইয়ের পর আবারো রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পথ খুলে গেল জামায়াতের সামনে।
উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রিটের নিষ্পত্তিতে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জামায়াত আপিল করলেও ২০২3 সালের নভেম্বর মাসে মূল আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় ছয় বিচারপতির বেঞ্চ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ আদেশ দিয়ে আপিল খারিজ করে দেন। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে।
তবে গত বছরের ২২ অক্টোবর দেশের সর্বোচ্চ আদালত পূর্বের খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দিলে, আবারও আইনি লড়াই শুরু করে জামায়াত। এরপর ১২ মার্চ থেকে আপিল শুনানি শুরু হয় এবং গত ১৪ মে শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করা হয়।
রোববারের রায়ে জামায়াতের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন এবং ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম।
যদিও নিবন্ধনের বৈধতা ফিরে পেয়েছে জামায়াত, তবে দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাবে কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতীক ইস্যুতে কমিশনের সিদ্ধান্ত হবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম ও নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়।
জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে দলটির অতীত ভূমিকা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থানের কারণে এ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে আপিল বিভাগের এই রায় দলটির জন্য বড় ধরনের আইনি জয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচন কমিশন ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং রাজনৈতিক পরিসরে জামায়াত কিভাবে তাদের কার্যক্রম পুনরায় সংগঠিত করে।
বাংরাধারা/এসআর