ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬১ জন নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ১০:২৮ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত দুজন ত্রাণপ্রার্থী রয়েছেন, যা গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। পৃথক একাধিক ইসরায়েলি হামলায় এসব প্রাণহানি ঘটেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

এদিকে, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (UNRWA) সতর্ক করে বলেছে যে, গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংস্থাটি দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রমের সম্প্রসারণের আহ্বান জানিয়েছে, অন্যথায় আগামী প্রজন্ম ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হবে।

আলজাজিরার খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার উত্তর গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছেন। চিকিৎসা সূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এছাড়াও, দক্ষিণ গাজায় বিতর্কিত ইসরায়েলি-যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত 'গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন' দ্বারা পরিচালিত রাফাহের উত্তরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে হামলায় কমপক্ষে দুই নারী নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিকে এই ফাউন্ডেশনটি কাজ শুরু করার পর থেকে গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে কমপক্ষে ৮৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরের পর থেকে তাদের উদ্ধারকারী দলগুলো কমপক্ষে ১৮ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহতকে বিভিন্ন স্থান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, গাজা শহরের একটি তাঁবুতেও ইসরায়েলি হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন, এবং অন্যান্য স্থানেও আরও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় নতুন করে বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা উত্তর গাজার ১৬টি এলাকায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের জন্য জোরপূর্বক স্থানচ্যুতির আদেশ জারি করেছে। এই হুমকিপ্রাপ্ত এলাকাগুলোর মধ্যে জাবালিয়া অন্যতম, যা বর্তমানে বিধ্বস্ত একটি শহর হলেও সেখানে তাঁবুতে বাসিন্দারা বাস করছিলেন। নতুন আদেশ পাওয়ার পর বাস্তুচ্যুত মানুষেরা ভয় ও আতঙ্কে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে।

আলজাজিরার সংবাদদাতা মোয়াথ আল-কাহলৌত জানান, মানুষ তাদের গাড়ি ও গাধা ব্যবহার করে এলাকাটি থেকে সরে যাচ্ছে। তিনি বলেন, "সবাই অজানার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা জানে না কোথায় যাবে।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, জ্বালানির অভাবে পরিবহনও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ফলে পরিস্থিতি অত্যন্ত বিশৃঙ্খল। "এখানে বসবাসকারী সবাই আতঙ্কিত," যোগ করেন তিনি।

এই নতুন হামলার প্রস্তুতি এবং স্থানচ্যুতির আদেশ গাজার মানবিক সংকটকে আরও গভীর করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাধারা/এসআর