“রক্ত আর পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না”: পাকিস্তানকে মোদির কড়া বার্তা
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ১০:১৪ রাত

কাশ্মিরের পেহেলগামে নির্মম সন্ত্রাসী হামলার পর জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র বার্তা দিয়েছেন। সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা দেওয়া এই ভাষণে তিনি বলেন, “রক্ত আর পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।”
পেহেলগামে হামলায় ভারতের নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার পর সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি ঘাঁটিতে অভিযান চালায়। এই অভিযানকে ঘিরেই মোদি তার কৌশলগত অবস্থান স্পষ্ট করেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, মোদির এই বক্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রতি ভারতের রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বার্তা অত্যন্ত স্পষ্ট। তিনি বলেন,
“সন্ত্রাস আর আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস আর বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। তেমনি রক্ত ও পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।”
এর মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তকেও একরকম স্থায়ী রূপ দেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, কিন্তু পানিচুক্তিতে ফেরার কোনো পরিকল্পনা ভারতের নেই।
অভিযানের নাম নিয়ে মোদি বলেন, “অপারেশন সিঁদুর শুধু একটি সামরিক পদক্ষেপ নয়, এটি আমাদের মা, বোন ও কন্যাদের প্রতি উৎসর্গীকৃত এক আবেগের নাম।” তিনি আরও বলেন, একজন নারীর সিঁদুর মুছে দেওয়ার চড়া মূল্য কী হতে পারে, তা সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপেই স্পষ্ট হয়ে গেছে।”
মোদি তার ভাষণে বলেন, অপারেশন সিঁদুর ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নেওয়া কৌশলের একটি পুনর্লিখন।
“ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব নীতিতে অটল থাকবে। ইসলামাবাদ থেকে আসা যেকোনো ধরনের পারমাণবিক হুমকি কিংবা ব্ল্যাকমেইল আমরা আর বরদাশত করব না।”
তিনি আরও জানান, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে পাকিস্তানে শতাধিক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
শুধু সন্ত্রাস ও পিওকে নিয়েই আলোচনা হবে মোদি সাফ জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যেকোনো আলোচনা কেবল দুটি বিষয়েই সীমাবদ্ধ থাকবে- সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির (PoK)।
তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল যারা ধর্ম যাচাই করে শিশুদের সামনেই বেসামরিকদের হত্যা করেছে, তারা কেবল ভারতের নয়, মানবতার শত্রু। এই ঘটনার পরই গোটা জাতি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তুলেছিল।”
মোদি সরকারের এই বার্তা এবং সামরিক কৌশল পাকিস্তানের ওপর শুধু কূটনৈতিক নয়, জলবণ্টন চুক্তির মতো কৌশলগত ক্ষেত্রেও চাপ বাড়াবে। ভারতের এই অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় এক নতুন মাত্রা যুক্ত করতে পারে।
বাংলাধারা/এসআর