গাজায় ঈদের আগের দিন ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯০, আহত প্রায় ২০০
প্রকাশিত: জুন ০৬, ২০২৫, ০৯:১৬ সকাল

ছবি: সংগৃহিত
আরবি চান্দ্র বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। তবে আনন্দের এই দিনে গাজার মানুষদের জন্য কোনো উৎসব নেই। ঈদের ঠিক আগের দিনই ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ভয়াবহ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৮৯ জন।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, “নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা নিয়ন্ত্রিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস হঠাৎ করে ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে সশস্ত্র হামলা চালায়। ওই হামলায় ১,২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং অন্তত ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরই প্রতিক্রিয়ায় সেদিন থেকেই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স)।
গাজায় গত দেড় বছরে চলমান সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ জন ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
চলমান আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। তবে দুই মাস না যেতেই, গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও শুরু হয় দ্বিতীয় দফার অভিযান। এ পর্যায়ে আরও ৪ হাজার ৪০২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১৩ হাজার ৪০৯ জন আহত হয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ২৫১ জনের মধ্যে এখনও কমপক্ষে ৩৫ জন জীবিত আছেন। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বারবার ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালত, আইসিজে-তেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।
তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখনো তার অবস্থানে অটল। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করা এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।”
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে। ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে তাতে সম্মতি দিলেও, হামাস এখনো তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। ফলে যুদ্ধবিরতির আশায় আশান্বিত হলেও অনিশ্চয়তা কাটছে না গাজাবাসীর।
বাংলাধারা/এসআর