ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি: ড. খলিলুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: মে ০৪, ২০২৫, ০১:২৯ দুপুর  

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের ত্রাণ পৌঁছাতে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে ‘মানবিক করিডর’ স্থাপনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।

রোববার (৫ মে) ঢাকা সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এ আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: চ্যালেঞ্জ ও কৌশল’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি বলেন, “মানবিক করিডর বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। কেবলমাত্র প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু আলোচনা হয়েছে।”

ড. খলিলুর রহমান আরও বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করে এসেছে। মিয়ানমারকে অস্থিতিশীল করার কোনো অভিপ্রায় আমাদের নেই। বরং, আমরা চাই এই সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হোক এবং রোহিঙ্গারা সম্মানজনকভাবে স্বদেশে ফিরে যাক।”

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তিনি দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করে বলেন, “রোহিঙ্গারা অবশ্যই তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যাবে। কাজটি সহজ নয়, কিন্তু সরকার তা বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

সেমিনারে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের মতো মানবিক ইস্যুগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হওয়ার নজির খুবই কম। ইতিহাস বলে, এই ধরনের সংকটের মীমাংসা অনেক সময় সংঘাতের মধ্য দিয়েই হয়।”

তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, আফ্রিকার উপনিবেশবিরোধী সংগ্রামসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর স্বাধীনতা আন্দোলনের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, “জটিল মানবিক সংকটগুলো বহু ক্ষেত্রে যুদ্ধ কিংবা সংঘাতের মাধ্যমেই সমাধিত হয়েছে। তবে আমরা চাই রোহিঙ্গা সংকট তার ব্যতিক্রম হোক।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাখাইনে চলমান সহিংসতা এবং নিরাপত্তাহীনতা এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। এ অবস্থায় মানবিক করিডর নিয়ে আলোচনার বিষয়টি নতুন করে কূটনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করে জানানো হয়েছে, কোনো ধরনের ‘মানবিক করিডর’ স্থাপনে বাংলাদেশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত হয়নি, বরং দেশের স্বার্থ এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিবেচনায় রেখে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


বাংলাধারা/এসআর