মেট্রো স্টেশনের ফাঁকা জায়গায় ব্যবসার সুযোগ: বাণিজ্যিক ব্যবহারের নতুন দ্বার খুলছে ডিএমটিসিএল
প্রকাশিত: মে ০৭, ২০২৫, ১২:৩১ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ঢাকার মেট্রোরেল শুধু যাত্রী পরিবহনই নয়, এবার খুলে দিচ্ছে নতুন এক বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দুয়ার। ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনের ফাঁকা ফ্লোরগুলো ভাড়া দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যবহারের সুযোগ দিতে যাচ্ছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এতে একদিকে যেমন আয় বাড়বে প্রতিষ্ঠানটির, অন্যদিকে উদ্যোক্তাদের জন্য তৈরি হবে ভিন্নধর্মী ব্যবসার নতুন প্ল্যাটফর্ম।
ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, এমআরটি লাইন-৬ এর মোট ১৬টি স্টেশনের মধ্যে শুধু ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার স্টেশন তিনতলা বিশিষ্ট। এই দুটি স্টেশনের দ্বিতীয় তলায় রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুট ফাঁকা জায়গা, যা এখন ভাড়া দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই বাণিজ্যিক স্পেসে শপিংমল, ডেইলিশপ, ব্যাংক, করপোরেট অফিস বা অন্য যেকোনো সেবামূলক ব্যবসা চালু করা যাবে। ইতোমধ্যে একটি উন্মুক্ত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ডিএমটিসিএল। সেখানে বলা হয়েছে, আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে এবং ভাড়ার প্রস্তাব হতে হবে বসুন্ধরা সিটি কিংবা যমুনা ফিউচার পার্কের সমপর্যায়ের। ইজারার মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ বছর, যা নবায়নযোগ্য নয়।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ জানান, “প্রতিটি স্টেশনের স্পেস প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুট, যা বড় ধরনের ব্যবসা পরিচালনার জন্য যথেষ্ট। প্রথমে বড় স্পেসগুলো ভাড়া দেওয়া হবে। পরবর্তীতে লাইন-৬ এর অন্যান্য স্টেশনের ছোট ছোট রিটেইল স্পেসগুলোও ইজারা দেওয়া হবে।”
২০২২ সালের ডিসেম্বরে সীমিত পরিসরে চালু হওয়া মেট্রোরেল ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে পুরোপুরি চালু হয়। প্রথম অর্থবছরে (২০২২-২৩) টিকিট বিক্রি থেকে ডিএমটিসিএল আয় করে ১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৩ কোটি ৯১ লাখ টাকায়।
তবে এতেও প্রতিষ্ঠানটির সব খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ দৈনন্দিন পরিচালনা ব্যয়ের পাশাপাশি জাইকা থেকে নেওয়া ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার বিশাল ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে আয় বাড়াতে স্টেশনগুলোর ফাঁকা জায়গা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে ডিএমটিসিএল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার ব্যস্ত জীবনে মেট্রো স্টেশনকে শুধু যাতায়াতের জায়গা না ভেবে যদি তা বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবেও গড়ে তোলা যায়, তাহলে নগরবাসীর সময়, সেবা ও অর্থ—সব কিছুর সাশ্রয় হবে। বিদেশের অনেক শহরের মতোই, আমাদের রাজধানীতেও এ ধরনের উদ্যোগ ঢাকার আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
বাংলাধারা/এএস