ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্ছেদ অভিযান: নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে যৌথ পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ০৩:১৪ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে যৌথ উচ্ছেদ অভিযান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্যান এলাকার নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উদ্যান কর্তৃপক্ষ এ অভিযান পরিচালনা করছে।

সকাল ৯টায় টিএসসি-সংলগ্ন গেট দিয়ে শুরু হওয়া অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) ফাতেমা বিনতে মুস্তাফা, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, শাহবাগ থানার পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

অভিযান চলাকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ডিএসসিসির দুটি বুলডোজার দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে অবস্থিত অন্তত ১০টি ছোট দোকান ও অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলে এ কার্যক্রম। এ সময় কোনো ধরনের বাধা বা উত্তেজনা দেখা যায়নি। আনসার ও পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।

এক দোকানদার অমিত জানান, ‘কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎই ভাঙচুর শুরু হয়েছে। দোকানের ভেতরে আমাদের কিছু মালপত্র ছিল। সেগুলো নিতে অনুমতি চেয়েছি।’ অভিযান চলাকালীন উপস্থিত কোনো কর্মকর্তা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অভিযান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম বলেন,

"সোহরাওয়ার্দী উদ্যান একটি জাতীয় পর্যায়ের মুক্ত উদ্যান। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এখানে ঘুরতে আসে, সময় কাটায়। কিন্তু অবৈধ দোকানপাটের কারণে জনসাধারণের চলাচল ও নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছিল। আমরা চাই, মানুষ নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে চলাচল করতে পারুক। সেই লক্ষ্যেই আজকের অভিযান।"

এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও উদ্যান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—সন্ধ্যা ৮টার পর উদ্যান বন্ধ রাখা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, এবং নিরাপত্তা জোরদার করা। আজকের অভিযান সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ।

বিশ্লেষকদের মতে, সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, সেটিকে প্রশমিত করতে এবং উদ্যান এলাকাকে পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে প্রশাসনের এই উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ।

তবে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, এ ধরনের অভিযান যেন শুধু এককালীন না হয়, বরং নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে একটি সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ নগর বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়।


বাংলাধারা/এসআর