দুই উপদেষ্টার সাবেক এপিএস-পিওসহ এনসিপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদে ডাকল দুদক
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ০৭:২৮ বিকাল

ছবি: সংগৃহিত
সরকারি উপদেষ্টাদের সাবেক একান্ত সচিব ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক সাবেক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
জানা গেছে, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক এপিএস মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সাবেক পিও তুহিন ফারাবি এবং আরেক পিও মাহমুদুল হাসান—এই তিনজনকে যথাক্রমে ২২, ২০ ও ২০ মে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এনসিপির সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে ২১ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, মোয়াজ্জেম হোসেন ও তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এনসিপি নেতা গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধেও রয়েছে চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ।
এরই মধ্যে দুদক তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে প্রয়োজনীয় নথি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, “তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসারে চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য এবং প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের প্রমাণ সংগ্রহে কাজ করছে আমাদের অনুসন্ধান দল। একইভাবে, মোয়াজ্জেম হোসেন ও গাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।”
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের পিও তুহিন ফারাবি এবং উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়ার এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে গত এপ্রিল মাসেই অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব পদ থেকে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয় ২১ এপ্রিল। তার নাম উঠে আসে এনসিটিবির পাঠ্যবই ছাপানোর জন্য কাগজ কেনা সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে।
তদন্তের অগ্রগতি জানতে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। সংগঠনের নেতারা বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর তদন্ত না হওয়া এবং মামলা না করার কারণে জনগণের মাঝে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, দুদক অনুসন্ধান শুরু করলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। রাষ্ট্রীয় প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই আমরা দাবি করছি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা দায়ের করে গ্রেফতারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
তিনি আরও বলেন, “দুদককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। আর কোনো পক্ষ যেন এই তদন্ত প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ না করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা দরকার।”
বাংলাধারা/এসআর