অর্থবছর ২০২৪–২৫
রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড: প্রথমবার ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল প্রবাসী আয়ের ধারা
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৬:৫৮ বিকাল

ফাইল ছবি
চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) ধারা ইতিহাস গড়েছে। অর্থবছর শেষ হতে এখনও দু’দিন বাকি থাকলেও ইতিমধ্যে দেশে এসেছে ৩০ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার (৩ হাজার ৪ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স। এ দিয়ে প্রথমবারের মতো দেশের রেমিট্যান্স আয়ের পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করল। এর আগে, ২০২০–২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল করোনা সময়ের রেকর্ড।
রেমিট্যান্স প্রবাহের এ উল্লম্ফনের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও উর্ধ্বমুখী। বর্তমানে গ্রস রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতিতে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৫৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ২৩৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ চলতি জুন মাসেই প্রায় ১৭ কোটি ডলার বা ৭ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো ঋণ জালিয়াতি ও দুর্নীতি হ্রাস পাওয়ায় অর্থপাচার নিয়ন্ত্রণে থাকা। এর আগে করোনা মহামারির সময় বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছিল, কারণ লকডাউনের কারণে হুন্ডির চাহিদা সেসময় কমে গিয়েছিল।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ গত বছরের তুলনায় সাড়ে ২৬ শতাংশ বেশি। শুধু রেমিট্যান্সেই নয়, রপ্তানি আয়েও প্রায় ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে বৈদেশিক ঋণও পেয়েছে, যা রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে নানা উপায়ে দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময় রিজার্ভ কমে নেমে আসে ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। সেই জায়গা থেকে এখন আবার রিজার্ভ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
বিশ্লেষকরা আশা করছেন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে, যা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ইঙ্গিত।
বাংলাধারা/এসআর