ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য: আসিফ মাহমুদ

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ১০:২৩ রাত  

ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, “জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণই এ সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। দেশকে সন্ত্রাসী রাজনীতি থেকে মুক্ত করতেই আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

রবিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একাধিক স্ট্যাটাসে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা কঠিন। সেই কঠিন কাজটি নিয়েই এখন আমরা এগোচ্ছি। রাজপথের লড়াই এখনও শেষ হয়নি, বরং অন্য মাত্রায় প্রবেশ করেছে। যারা জুলাই আন্দোলনের অংশ ছিলেন, তাদের মিলনমেলা এখনকার সরকারে—তাতে এক ধরনের দায়বদ্ধতাও কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “রাজপথেই আমি অভ্যস্ত, সেখানেই আমার স্বাচ্ছন্দ্য। মাঝে মাঝে মনে হয়, সব ছেড়ে আবার রাজপথে নেমে যাই। কিন্তু তখনই মনে হয়, কারও তো পাহারায় থাকা উচিত- যেন আন্দোলনের চেতনা না হারায়, যেন শহীদদের আত্মত্যাগ মূল্যহীন না হয়।”

সরকারে থেকে চাপ ও দ্বন্দ্বের চিত্র তুলে ধরে আসিফ মাহমুদ বলেন, “সরকারে থাকা এখন যেন দু’ধারী তলোয়ারের ওপর হাঁটা। সরকার কোনো সিদ্ধান্তে ভুল করলে- even যদি সেটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে হয়- তবু জনগণের জবাবদিহি আমাদেরই দিতে হয়। আবার ছাত্র-জনতা মাঠে নামলে রাষ্ট্রের শক্তিকেন্দ্রগুলো আমাদের সন্দেহের চোখে দেখে। অনেকে মনে করে, আমরা ষড়যন্ত্র করছি, অথচ আমরা বরং ব্যালান্স রক্ষা করতে গিয়ে চরম ঝুঁকিতে আছি।”

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এই উপদেষ্টা বলেন, “রাষ্ট্র চালানো কোনো সহজ কাজ নয়। এর ভিতর নানা স্তরে বাধা রয়েছে। তবু উপদেষ্টা পরিষদ, বারবার বাধার মুখে পড়েও চেষ্টা করছে যেন ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নেয়। যেদিন এই পরিষদ জনগণের বিপক্ষে যাবে, আমি সেদিনই সরে যাব।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে জনগণের দাবিতে। এটা জুলাই জনতার আরেকটি বিজয়। যারা এখনও আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল- তাদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, এই মুহূর্তে সামান্য অসতর্কতা তাঁদের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। জুলাইকে উপেক্ষা করে কেউ এ দেশে আর টিকে থাকতে পারবে না।”

একইসঙ্গে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশত্যাগ ও পালানোর ঘটনার তদন্ত সম্পর্কেও মন্তব্য করেন। আসিফ মাহমুদ জানান, “ঘটনাটির উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের নেতৃত্বে এই কমিশন সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। দোষীদের কেউই রেহাই পাবে না।”

উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় পরিবর্তন এসেছে। জাতির ইতিহাসে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একাধিক উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নতুন করে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যেই আসিফ মাহমুদের বক্তব্য জনগণের মধ্যে নতুন প্রত্যাশা ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

বাংলাধারা/এসআর