রাতে উত্তাল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষকের ওপর সাবেক শিক্ষার্থীর হামলায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত: মে ০৩, ২০২৫, ১১:২৯ দুপুর

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী ছাত্রবিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ সাকির ওপর এক সাবেক শিক্ষার্থীর হামলার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। শিক্ষকদের নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে গভীর রাতে রাজপথে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাত প্রায় পৌনে ১০টার দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, বাংলা ডিসিপ্লিনের ১৮ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ নোমান কিছু সময়ের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে শিক্ষক হাসান মাহমুদের শরীরে আঘাত করেন। এতে গুরুতর আহত হলে শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সংগঠিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ‘শিক্ষকের গায়ে হাত মানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্বে আঘাত’- এমন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এটা শুধুই একটি ব্যক্তি শিক্ষক নয়, গোটা শিক্ষকসমাজকে লাঞ্ছিত করার শামিল। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারসহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।”
রাত ১টার দিকে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। শিক্ষক আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিকে ‘অবর্ণনীয়’ ও ‘অকল্পনীয়’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আমি বাকরুদ্ধ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ বছরের ইতিহাসে এ রকম নিকৃষ্ট ঘটনা কখনো ঘটেনি। শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়া মানেই গোটা শিক্ষাব্যবস্থা অপমানিত হওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলাকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তাৎক্ষণিকভাবে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। কেউ কেউ ক্ষোভে বলেন, “আজ শিক্ষকের গায়ে হাত পড়েছে, কাল কার ওপর পড়বে? এই সংস্কৃতি যদি প্রতিরোধ না করা হয়, তবে এ শিক্ষাঙ্গনের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি বৈঠক আহ্বান করার কথা জানা গেছে, যেখানে ঘটনার তদন্ত ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে এখন উদ্বেগ, ক্ষোভ ও আন্দোলনের আবহ বিরাজ করছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রশাসন সবাই এখন এক কণ্ঠে বলছেন- শিক্ষকের মর্যাদায় কোনোভাবেই আঘাত সহ্য করা হবে না।
বাংলাধারা/এসআর