ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

পুলিশের হাতে আর কোনো মারণাস্ত্র থাকবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০৬:৩৫ বিকাল  

ছবি: সংগৃহিত

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, পুলিশের হাতে আর কোনো প্রাণঘাতী বা মারণাস্ত্র থাকবে না। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সোমবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, “আমরা একটি স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি- পুলিশের হাতে কোনো মারণাস্ত্র থাকবে না। যাদের হাতে এখনো রয়েছে, সেগুলোও ফিরিয়ে নিতে হবে।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, তাদের ভয় দেখাবে না। সেই জায়গা থেকে অস্ত্র ব্যবহারে সংযম ও মানবিকতা জরুরি। অস্ত্র থাকবে শুধুমাত্র আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যদের হাতে। কারণ তাদের দায়িত্ব ও কার্যপরিধি সাধারণ পুলিশের চেয়ে ভিন্ন।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) পুনর্গঠন নিয়েও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “র‍্যাবকে আরও কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক করতে পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এই বিষয়ে সুপারিশ দেবে।”

গার্মেন্টস খাতের শ্রমিকদের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে। এটি বাধ্যতামূলক। তবে কেউ যদি অযৌক্তিক বা অবৈধ দাবি তোলে, সেটি সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করবে না। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরুর হাটগুলোতে চাঁদাবাজি রোধে করণীয় নিয়েও বক্তব্য দেন উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, “প্রতিটি গরুর হাটে ১০০ জন করে আনসার সদস্য মোতায়েনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে করে কোনো প্রকার চাঁদাবাজি না হয় এবং বিক্রেতা ও ক্রেতারা নিরাপদে লেনদেন করতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “ঈদযাত্রা যাতে নির্বিঘ্ন হয়, সে লক্ষ্যে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো চাঁদাবাজি বা হয়রানি সহ্য করা হবে না।”

অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে জনবান্ধব ও মানবিক করে তুলতে একটি বড় অঙ্গীকার হিসেবে দেখা হচ্ছে। মারণাস্ত্রহীন পুলিশ ব্যবস্থা, র‍্যাব পুনর্গঠন, শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং ঈদের সময় চাঁদাবাজি রোধে নেওয়া পদক্ষেপগুলো নাগরিকদের নিরাপত্তা ও আস্থার জায়গা থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


বাংলাধারা/এসআর