ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে চলছে সাজানো নাটক: মির্জা আব্বাস

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০৩:৫৩ দুপুর  

ছবি: বাংলাধারা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশে এখন এক অভিনব রাজনৈতিক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। 'আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ' দাবি করা আন্দোলনের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ও নজর ঘোরানোর অপচেষ্টা লুকিয়ে আছে বলে মনে করেন তিনি।

সোমবার (১২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন পিন্টুর স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, “নাসির উদ্দিন পিন্টুর মতো নেতা ও হাজারো ত্যাগী কর্মীর আত্মবলিদানের মাধ্যমে আজকের বিএনপি দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আজ সেই বিএনপিকেই বারবার ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে।”

শাহবাগে একটি নতুন দল কর্তৃক আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচিকে 'পরিকল্পিত নাটক' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “কোনো বড় অপকর্ম ঘটানোর আগে শেখ হাসিনা বরাবরই মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে নানা চাল চালেন। এখনো হয়তো তেমনই কিছু ঘটতে যাচ্ছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার নিজেদের মতো করে 'নিষিদ্ধ এলাকা' ঘোষণা করে একপক্ষকে কর্মসূচি পালনের সুযোগ দিচ্ছে, অন্যদিকে বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে। “ডিএমপির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এনসিপি বিক্ষোভ করতে পারছে, আর আমাদের জন্য রাস্তায় নামাই অপরাধ—এটাই কী সরকারের নিরপেক্ষতা?”

বিএনপিকে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে সহযোগিতা করছে—এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, “১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত বিএনপি কখনোই তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। যারা এ ধরনের অপপ্রচার চালায়, তারা প্রকৃতপক্ষে বিএনপির শত্রু, দেশের শত্রু।”

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, “ভিআইপি মর্যাদা নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি দেশ ছাড়লেন, অথচ সরকার কিছুই জানে না! তাহলে সরকার আসলে জানে কী?”

এসময় তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের ভেতরে পরিকল্পিতভাবে বিএনপিপন্থিদের সরিয়ে দিয়ে আওয়ামী ও জামাতপন্থিদের বসানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, “দেশ এখন এমন কিছু লোকের দ্বারা চলছে, যারা নাগরিকই না। উপদেষ্টা ও দূতাবাসগুলোর ছায়াশাসন চলছে, যেন দেশ আবার ঔপনিবেশিক আমলে ফিরে গেছে।”

বর্তমান সরকারের 'মানবিক করিডোর' পরিকল্পনার সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, “বিশ্বের কোথাও ‘মানবিক করিডোর’ নামে কিছু নেই। এটা বানানো নাম, যার পেছনে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থ কাজ করছে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সরকারের নেই।”

তিনি প্রশ্ন করেন, “আমরা সেন্টমার্টিন যেতে পারছি না কেন? এনসিপি বা জামায়াত এই ইস্যুতে চুপ কেন? এটা কি সাধারণ মানুষের ইস্যু নয়?”

বিএনপি ছাড়া এই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুগুলোতে আর কোনো রাজনৈতিক দল সোচ্চার হচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

দেশে সন্দেহজনক বিদেশি আগমনের হার বেড়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিভিন্ন নামে নতুন নতুন মিশন চালু হচ্ছে, সরকার এসবের পেছনে যুক্ত। এটি স্পষ্ট, সরকার এখন আর দেশের স্বার্থরক্ষায় কাজ করছে না, বরং তারা অন্য কোনো পক্ষের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব্যস্ত।”

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক এবং নাসির উদ্দিন পিন্টু স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক সাইদ হাসান মিন্টু।

 

বাংলাধারা/এসআর