ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

রাজনীতিতে তরুণদের সক্রিয় হতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: মে ০৬, ২০২৫, ১০:০৯ রাত  

রাজনীতিতে তরুণদের আরও সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, 'স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে এবং সমাজে অর্থবহ পরিবর্তন আনতে হলে তরুণদের রাজনীতিতে সরব উপস্থিতি দরকার।'

মঙ্গলবার (৬ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নরওয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরুণ নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে এই আহ্বান জানান তিনি।

নরওয়ের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সোশ্যালিস্ট ইয়ুথ লীগের ডেপুটি লিডার নাজমা আহমেদ, এইউএফ-এর আন্তর্জাতিক নেতা ফাউজি ওয়ারসামে, সেন্টার পার্টির ডেন স্কফটেরুড, কনজারভেটিভ পার্টির ওলা স্ভেনেবি, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটসের হ্যাডল রাসমুস বিয়ুল্যান্ড, গ্রিন পার্টির তরুণ সংগঠন গ্রিন ইয়ুথের টোবিয়াস স্টকেল্যান্ড এবং ইনল্যান্ডেট ইয়াং লিবারেলসের সাবেক নেতা থাইরা হাকনস্লকেন।

প্রধান উপদেষ্টা এই তরুণ নেতাদের রাজনৈতিক ভাবনা, কার্যক্রম এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। একই সঙ্গে তিনি নরওয়ের রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণের পরিসংখ্যান জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

সাক্ষাতে নরওয়ের তরুণ নেতারা বাংলাদেশের তরুণদের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তারা জানান, বাংলাদেশে অনেক তরুণই এখনও জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেয়ার সুযোগ পাননি। এ প্রেক্ষিতে তারা জানতে চান- তরুণদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে।

জবাবে প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘নতুন সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার হলো নির্বাচনী ব্যবস্থার পদ্ধতিগত সংস্কার। গত ১৫ বছরে একটি ভুয়া ভোটব্যবস্থাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। বাস্তবতা হলো— কোটি কোটি মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তরুণদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল সংস্কার প্রয়োজন।’

দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রসঙ্গে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমরা একটি পুরোনো ধাঁচের রাজনীতির উত্তরাধিকার পেয়েছি। এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সেই জঞ্জাল পরিষ্কার করে নতুন একটি রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলা। আমরা এক ধরনের ট্রানজিশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এই সময় দীর্ঘ হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তরুণদের রাজনীতিতে আসতে উৎসাহ দিচ্ছি। তারা যদি এগিয়ে না আসে, তবে ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারণে তাদের কোনও ভূমিকা থাকবে না। পরিবর্তন আনতে হলে নেতৃত্বেও আসতে হবে।’

সাক্ষাৎ শেষে নরওয়ের প্রতিনিধিরা জানান, তারা বাংলাদেশে তরুণদের মাঝে রাজনৈতিক সচেতনতা ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা দেখতে পেয়েছেন, যা তাদের আশাবাদী করে তুলেছে।

প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকার তার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সুশাসন ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে আসছে। তরুণদের সক্রিয়তা এই যাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে পারে- এমনটাই বিশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার।

 

বাংলাধারা/এসআর