ঢাকা, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

ইসরাইলের অব্যাহত হামলায় গাজায় আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ১২:২২ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ একাধিক হামলায় নিহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮১ জন ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে শুধু উত্তর গাজাতেই রাতভর বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৫১ জন। আর দক্ষিণ গাজার দুটি হাসপাতাল লক্ষ্য করে চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন।

দক্ষিণ গাজার ইউরোপিয়ান ও নাসের হাসপাতালে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এসব হামলায় নিহতদের মধ্যে চিকিৎসাধীন রোগী ছাড়াও আছেন একজন সাংবাদিক, যিনি চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসেছিলেন। হাসপাতালের মতো মানবিক স্থাপনাতেও বোমা বর্ষণের ঘটনায় পুরো ফিলিস্তিনি জনগণ আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, হাসপাতালের ওপর চালানো হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর গাজায় শুরু হয় ভয়াবহ বিমান হামলা। স্থানীয় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত উত্তর গাজা অঞ্চলে নিহত হন অন্তত ৫১ জন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসী যুদ্ধ চলছে, যা ইতোমধ্যে এক ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। টানা ১৫ মাসের সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি এক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরাইল। এর ফলে দুই মাসের মতো স্ব relativa শান্তি ফিরে আসে গাজায়।

তবে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে হামাসের সঙ্গে সমঝোতা ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ তুলে আবারও বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। নতুন করে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে গাজা আবারও রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় আরও দুই হাজার ৭৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় সাত হাজার ৭০০ জন। এই নতুন হামলার ঢেউ কার্যত জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে।

গত বছরের অক্টোবর থেকে চলমান যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৯০৮ জনে। আর আহত হয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৭২১ জন। এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যা এক ভয়াবহ গণহত্যার চিত্রই তুলে ধরে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরাইলের লাগাতার হামলার ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ এখন বাস্তুচ্যুত। সীমিত খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের সুযোগ নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। হাসপাতাল, স্কুল, ঘরবাড়ি— কিছুই রক্ষা পায়নি ইসরাইলি বোমাবর্ষণ থেকে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের অনেকাংশের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা ইসরাইলকে যেন আরও বেপরোয়া করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে "যুদ্ধাপরাধ" ও "মানবতাবিরোধী অপরাধ" হিসেবে আখ্যা দিলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।


বাংলাধারা/এসআর