চবির পঞ্চম সমাবর্তন: ড. ইউনূস প্রধান বক্তা, দিনজুড়ে বর্ণিল আয়োজন
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ১০:৩১ দুপুর

ফাইল ছবি
নয় বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহুপ্রতীক্ষিত পঞ্চম সমাবর্তন। এ বিশাল আয়োজনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। বুধবার সকাল থেকেই সমাবর্তনে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে জমায়েত হয়েছেন প্রায় ২৩ হাজার গ্র্যাজুয়েট।
দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। সমাবর্তনের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও চবির প্রাক্তন শিক্ষক নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি গ্রহণ করবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইয়াহইয়া আখতার। উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজসহ আরও চারজন উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠান শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে অতিথিদের আসন গ্রহণের মাধ্যমে। এরপর ১টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য সমাবর্তন শোভাযাত্রা, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ জন শিক্ষক অংশ নেবেন। তবে এবার গ্র্যাজুয়েটদের অংশগ্রহণ রাখা হয়নি শোভাযাত্রায়।
মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে দুপুর ২টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর চলবে পিএইচডি, এমফিল, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠান, যা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগদানের আগে ড. ইউনূস ব্যস্ত সময় কাটাবেন চট্টগ্রাম শহরজুড়ে। সকালেই তিনি যাবেন চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে। এরপর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পানি সংকট বিষয়ক এক বৈঠকে অংশ নেবেন। সেখান থেকে সার্কিট হাউসে সংক্ষিপ্ত বিরতির পর তিনি চবিতে পৌঁছাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তিনি ঘুরে দেখবেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, গ্রামীণ ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয় এবং উপাচার্যের বাসভবন। সমাবর্তন শেষে বিকেল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে তিনি কালুরঘাটে যাবেন। এরপর সার্কিট হাউসে ফিরে অথবা সরাসরি ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ত্যাগ করার কথা রয়েছে তার।
চবির এই পঞ্চম সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র প্যান্ডেল নির্মাণেই ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি টাকা। আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই প্যান্ডেলের আয়তন প্রায় দেড় লাখ স্কয়ার ফিট।
এবারের সমাবর্তনে ৪২ জন পিএইচডি এবং ৩৩ জন এমফিল ডিগ্রিধারী ছাড়াও হাজার হাজার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ধারণা, অনুষ্ঠানস্থলে প্রায় এক লাখ মানুষ সমবেত হবেন- যার মধ্যে থাকবেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাবেক গ্র্যাজুয়েট ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
সমাবর্তনে অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। সকাল থেকেই তারা গাউন সংগ্রহ, ছবি তোলা ও বন্ধুদের সঙ্গে ক্যাম্পাসজুড়ে ঘোরাঘুরি করছেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডিগ্রি গ্রহণের এই মুহূর্ত যেন তাদের জন্য জীবনের এক অন্যতম স্মৃতি হয়ে থাকবে।
বাংলাধারা/এসআর